চীনের পানি এলে বন্যা ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা

চীনের পানি এলে বন্যা ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা

ভারতের পাশাপাশি চীনের বন্যার পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। তবে বন্যা মোকাবেলায় সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানিয়েছে কমিটি। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ২৮টি জেলা বন্যাকবলিত। চীনের পানিও বাংলাদেশে আসার আশঙ্কা রয়েছে। তখন বন্যা ভয়াবহ হতে পারে। সরকার আশঙ্কা করছে এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। সেইভাবে আগাম প্রস্তুতিও সরকারের আছে। বন্যা যেন দীর্ঘস্থায়ী না হয় সেটা আমরা কামনা করি। তবে হলেও যেন আমরা মোকাবেলা করতে পারি সেই প্রস্তুতি সরকারের আছে।

তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে ত্রাণ কম পাওয়া বা না-পাওয়ার অভিযোগ থাকতেই পারে। হয়তো হতে পারে যেখানে ১০০ টন ত্রাণ সাহায্য দরকার, দেয়া হয়েছে কয়েক টন। তবে মন্ত্রণালয় এসব মনিটর করছে। তাদের কার্যক্রম ও মনিটর যাতে আরো গতিশীল ও কার্যকরী হয়, সেটা বলা হয়েছে। মানুষ যেন বেশি কষ্টে না পড়ে তা দেখতে বলা হয়েছে। ত্রাণ যাতে কম না পড়ে বা অপ্রতুল না হয় সেটা আমরা দেখতে বলেছি।

কমিটির সভাপতি জানান, সোমবার (আজ) মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বন্যা উপদ্রুত এলাকা সফরে যাওয়া হবে। সংসদীয় কমিটির সদস্যের মধ্যে আগ্রহী কেউ ত্রাণ তৎপরতায় অংশ নিতে চাইলে নিতে পারবেন। বন্যায় ত্রাণতৎপরতা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কাজে কমিটি সন্তুষ্ট বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ দিকে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রকৌশলীদের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করে এগুলো নির্মাণ করতে বলেছি। কালভার্ট করা হলে তার সুবিধাটা যেন জনগণ পায়। এজন্য রাস্তার দরকার হলে সেটা যেন হয়। আমরা ভৌগোলিকতা বিবেচনা করে করে কালভাটের সংখ্যা বরাদ্দ না দিয়ে প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে করতে বলেছি। তিনি বলেন, কাবিখা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় গম। কিন্তু উপজেলা থেকে তারা গমের পরিবর্তে পান চাল। টনপ্রতি চালের দাম যদি ৪০ হাজার করে ধরা হয় বাস্তবে এর দাম ১৮ হাজার বা তার চেয়েও কম। এই প্রকল্পের যে চেয়ারম্যান থাকেন তিনি কিভাবে এটার সমন্বয় করবেন? তাকে তো চুরি করতে বাধ্য করা হচ্ছে, তাকে হিসাব মিলাতে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি স্বচ্ছতার মধ্যে আনতে বলেছি। সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙন এলাকায় বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে আলোচনা হয়।
কমিটি সঠিক স্থান নির্বাচন করে জনস্বার্থে ও প্রয়োজনের নিরিখে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করার সুপারিশ করে। এ ছাড়াও এসব কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।

কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: এনামুর রহমান, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন), মো: আফতাব উদ্দিন সরকার, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জুয়েল আরেং, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং কাজী কানিজ সুলতানা অংগ্রহণ করেন। বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এমজে/