ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কটূক্তি করার অভিযোগে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেনের আদালতে এ মামলা করেন গৌতম কুমার এডবর নামক রাজধানীর ভাষাণটেকের এক সমাজসেবক।

এ মামলায় গৌতম কুমার এডবরকে আইনগত সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সঞ্চয় কুমার দে দুর্জয়।

মামলার বিষয়ে সুমন কুমার রায় জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন ফেসবুকে বলেন, পৃথিবীর মধ্যে নিকৃষ্ট এবং বর্বর জাতি হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী, যাদের ধর্মের কোনো ভিত্তি নেই। মনগড়া বানানো ধর্ম। হয়তো দুই একটি খবর নিউজে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া আরো আনেক ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়, তাদের নৃশংসতার আড়ালে।

অভিযোগে আরো বলা হয়, গত ১৯ এপ্রিল সনাতন ধর্ম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মিথ্যা, অশ্লীল চরম আপত্তিকর মন্তব্য করেন। যার ফলে হিন্দু সমাজ তথা গোটা জাতির মধ্যে এ বিষয় নিয়ে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। আসামির এরকম আচরণ এবং সোস্যাল মিডিয়ার অশ্লীল অবমাননাকর ও অরুচিপূর্ণ বক্তব্যর ফলে রাষ্ট্র ও হিন্দু সমাজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। আসামির এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রধানের ফলে সাধারণ জনগণ নীতিভ্রষ্ট, অসৎ হইতে উদ্ধত হওয়ায়র ফলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হওয়ার সম্ভবনা আছে।

তবে এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন আগে থেকেই বলে আসছেন তার এই ফেসবুক আইডিটি ফেক। তিনি গত ২০ জুলাই তার ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেন, ‘আমার নাম ব্যাবহার করে একটি ফেক পেজ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিষেদগার করছে। আমি এ বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে পৃথক আইনে মামলার প্রস্তুতির কথা গতকালই জানান হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি সুমন কুমার রায়। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেই বিষয়টি জানান।

সুমন কুমার রায় গতকাল বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একটি এবং মানহানির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে দুই ধরনের অভিযোগ আনার সুযোগ আছে। একটি ২৯৫ (ক) ধারায়। অপরটি ফেসবুক লাইভে মানহানি করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধিত ধারায় অভিযোগ আনা হবে।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন গতকাল বলেন, ‘মামলা করা একটি সাংবিধানিক অধিকার। যে কেউ কারো বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এটাই বাংলাদেশের নিয়ম হওয়া উচিত।’

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমানের আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

পেনাল কোডের ১২৩ (এ), ১২৪ (এ) ও ৫০০ ধারায় মামলাটি আমলে নেয়ার জন্য ব্যারিস্টার সুমন আদালতে আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে খারিজের আদেশ দেন।