‘সরকারের উদাসীনতায় বন্যায় মানবিক বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে’

‘সরকারের উদাসীনতায় বন্যায় মানবিক বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে’

বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের সীমাহীন উদাসীনতা মানবিক বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে। সরকারের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে এই বিপর্যয় আরো বাড়ছে। বানভাসী মানুষদের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

পর্যাপ্ত সরকারি সহযোগিতাসহ বন্যার্ত মানুষের জন্য ৬ দফা দাবিতে রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ক্ষেতমজুর সমিতির মানববন্ধনে এসব কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।

দেশব্যাপী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সোহেল আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, সহকারী সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতালেব হোসেন, আরিফুল ইসলাম নাদিম, কল্লোল বণিক প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বানভাসী মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সহযোগিতার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। বন্যা আক্রান্ত অঞ্চলসমূহকে বন্যাদুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করে, বন্যা পরবর্তী বানভাসী মানুষের পুনর্বাসনের জন্য সরকারকে যথোপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বানভাসী মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণের অপর্যাপ্ততা মানুষকে দিশেহারা করে তুলেছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে এনজিও ঋণের কিস্তির চাপ। বানভাসী মানুষ যখন নিজের ভিটে-মাটি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে কোনোভাবে আধপেট খেয়ে জীবন পার করছে তখনও রক্তচোষা ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায়কারীরা তাদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তির জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে বন্যাদুর্গত অঞ্চলসমূহে বন্যা পরবর্তী ৬ মাসের জন্য এনজিও ঋণের কিস্তি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।

তারা আরো বলেন, বন্যা প্লাবিত অঞ্চলে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই রোগসমূহ মহামারী আকার ধারণ করতে পারে। তাই অবিলম্বে বন্যা প্লাবিত অঞ্চলের জন্য বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এই অঞ্চলসমূহে পর্যাপ্ত বিনামূল্যের ওষুধ সরবরাহের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, দেশ একদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে অপরদিকে লুটপাটের মহোৎসবের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে তলানীতে নামিয়ে আনা হচ্ছে। সর্বগ্রাসী এই লুটপাট শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে এই বানভাসী মানুষের ত্রাণেও ভাগ বসাচ্ছে। এই বানভাসী মানুষের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের বরাদ্দে অনিয়ম-লুটপাট-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

এদিকে সংগঠনের উদ্যোগে জানান হয় বানভাসী মানুষের ৬ দফা দাবিতে দেশব্যাপী স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, যশোর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, মাগুরা, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, কুমিল্লা, মহাখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ও উপজেলায় পালন করা হয়।

এমআই