২৪ ঘণ্টায় আরো ৫ জনের মৃত্যু

২৪ ঘণ্টায় আরো ৫ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও বরিশালে আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর লালমাটিয়ার সিটি হাসপাতালে মারা যান পুলিশের এসআই কোহিনুর আক্তার (৩২)। তিনি পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) কর্মরত ছিলেন। এসবির ডিআইজি (পলিটিক্যাল) মাহবুব হোসেন জানান, কোহিনুর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কয়েক দিন আগে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে গত সোমবার রাতে তাকে লালমাটিয়ার সিটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কোহিনুরের বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে।

এদিকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে গতকাল বুধবার দুপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রবিউল ইসলাম রাব্বিকে (২২) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আব্দুর রহমান খান জানান, রাব্বির বাসা রাজধানীর শেওড়াপাড়ায়। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।

বরিশালের গৌরনদীতে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আলেয়া বেগম (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আশোকাঠি গ্রামের মান্নান ফকিরের স্ত্রী। আলেয়ার স্বজনরা জানায়, ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় আলেয়া তার এক আত্মীয়র বাসায় বেড়াতে যান। ঢাকা থেকে গত সোমবার তিনি যখন এলাকায় আসেন তখন তার প্রচণ্ড জ্বর ছিল। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে পরীক্ষা করানো হলে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে রাত ১০টার দিকে গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহাবুবুল আলম মির্জা জানান, আলেয়া বেগমকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরার জব্বার আকনকান্দি গ্রামের বর্ষা আক্তার (২৮) নামের এক নারী গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি জাজিরার শাহেদ আলী মাদবরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। বর্ষা আক্তার গত ১৮ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথম দিকে তিনি তেমন গুরুত্ব দেননি। জ্বর নিয়েই বিদ্যালয়ে যেতেন। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৫ জুলাই পরিবারের সদস্যরা তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তার শরীরে ডেঙ্গুর আলামত পান। তারা তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরের দিন তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। স্বজনরা গত শনিবার তাকে ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তাকে কয়েক দফায় ১০ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। তার অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। গত মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এছাড়া, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাদারীপুরের শিবচরের ফারুক খান (২২) নামের এক যুবক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বুধবার বিকালে ইসলামিয়া হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়ে বলে পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, ছয়দিন আগে গত শুক্রবার শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় ফারুককে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় পাঠান। পরে ঢাকায় ইসলামিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফারুককে। পাঁচদিন চিকিৎসা শেষে বুধবার বিকালে ৩টার সময় তিনি মারা যান।

ফারুক খান শিবচর উপজেলার পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার সলু বেপারীর কান্দির বাবু খানের ছেলে। তিনি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকার মোল্লা হোটেলে বাবুর্চির কাজ করতেন।

ফারুকের বাবা বাবু খান বলেন, গত শুক্রবার ফারুক জ্বরে আক্রান্ত হয়। ওই সময় প্রথমে তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তাররা তাকে দ্রুত ঢাকায় পাঠান। সেখানে পাঁচদিন শেষে আজ বিকালে আমার ছেলে মারা যায়।

এমজে/