বাংলাদেশকে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কনভেনশন

নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত করতে হবে

নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত করতে হবে

পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বন্দি ও অপরাধীদের নিপীড়ন এবং নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত করতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কনভেনশন (ইউএনসিএটি)।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় শুক্রবার ইউএনসিএটি তার চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছে। এতে এই কমিটি বাংলাদেশ সরকারের জন্য ৭৭টি সুপারিশের কথা বলেছে। এ সব অভিযোগের তদন্ত করতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনেরও সুপারিশ করা হয়েছে।

আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগের বিবরণ, তাদের নিষ্ঠুরতা, জবাবদিহিতার অভাব, অজ্ঞাত বন্দি ও গুমের তথ্য প্রকাশে বাংলাদেশ সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে এ সময় ইউএনসিএটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

লন্ডনের বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর এমন তথ্য দিয়েছে। ইউএনসিএটি সনদে সই করার পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকারের রেকর্ড অনুসন্ধান করল স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা।

১৯৯৯ সালে নির্যাতনের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় সই করলেও গত মাস পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।

এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল সদস্য ফেলিস গায়ের বলেন, গত ২০ বছরে বাংলাদেশ কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। কিন্তু সপ্তাহখানেক আগে এসে তারা একটি প্রতিবেদন আমাদের দিয়েছে, যা কেবল আইন সম্পর্কিত।

তিনি বলেন, আমরা কোনো সন্তোষজনক সমাধানে আসতে পারিনি। আমাদের হাতে ১৬ পাতার একটি প্রতিবেদন আছে, যেটা ব্যাপক নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে শুরু হয়েছে। ব্যাপক ও নিয়মিত নির্যাতন।

২০ বাংলাদেশি কর্মকর্তার একটি প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেয়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটিকে জানিয়েছেন, সরকার যে কোনো সহিংস শাস্তি ও নির্যাতনের কার্যক্রম বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারাসংস্কার শুরু করেছে এবং নির্যাতনের দরুন কারা হেফাজতে মৃত্যুতে শূন্য সহনীয় নীতি মেনে চলছে।

গায়ের বলেন, সরকারি প্রতিনিধিরা বলছেন, ১৭টি নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু তাতে বিস্তারিত তথ্য নেই।

বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মী ও জাতিসংঘ সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে এই প্যানেল। এবার বন্দিদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি এবং ঘুষ আদায়ের জন্য তাদের ওপর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের ব্যাপক ও নিয়মিত নির্যাতন-নিষ্ঠুরতার অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্যাতন ও নিখোঁজের অভিযোগ নিতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার সদস্যদের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে বারবার প্রত্যাখ্যান করছে পুলিশ কর্মকর্তারা।