গরু বিক্রির ২৮ লাখ টাকা ছিনতাই, রাস্তায় শুয়ে কাঁদছেন ব্যবসায়ী

গরু বিক্রির ২৮ লাখ টাকা ছিনতাই, রাস্তায় শুয়ে কাঁদছেন ব্যবসায়ী

রাজধানীর তেজগাঁও কলোনী বাজার গরুর হাট এলাকা। বেলা পৌনে ১২টায় হাটের হাসিল ঘরের সামনে চোখে পড়ল একটি মানুষের জটলা। জটলার কারণে গাড়ি আটকে সামান্য যানজট সৃষ্টি হয়েছে মূল সড়কে। কাছে গিয়ে দেখা গেল এক ব্যক্তি মিনি ট্রাকের সামনে শুয়ে পড়েছেন।

তিনি বার বার বিলাপ করতে করতে বলছেন, ‘গাড়ি আমার ওপরে তুলে দেন। আমি বাঁচতে চাইনা গো। আল্লাহ, আল্লাহ। আমারে আপনারা মাইরা ফালান। ও মা গো আল্লাহ রে।’

উপস্থিত মানুষের জটলার মধ্যে হঠাৎ দৌড়ে আসেন হাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষের এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে আসেন এক পুলিশ সদস্য। সড়কের মধ্যখানে থেকে ওই ব্যক্তিকে টেনে তুলে নিয়ে বসালেন একটি জায়গায়। সবাই নানা রকমের সান্ত্বনা বাণী শোনাচ্ছেন তাকে। কিন্তু কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না ওই ব্যক্তির কান্না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই ব্যক্তি একজন গরু ব্যবসায়ী। হাটে ১৮টি গরু নিয়ে এসেছেন তিনি। এর মধ্যে বিক্রি হয় ১৬টি। গরু বিক্রির মোট ২৮ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে তার।

ওই গরু ব্যবসায়ীর নাম মো. হানিফ শেখ। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে। ধার-দেনা করে কোরবানির হাটে ১৮টি গরু নিয়ে এসেছেন। ইতিমধ্যে ১৬টি গরু ২৮ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নগদ টাকা কাছে রাখা নিরাপদ না। তাই ভেবে ছেলে এবং জামাইয়ের মাধ্যমে টাকাগুলো বাড়িতে পাঠাচ্ছিলেন তিনি।

তিনি আরো জানান, আজ রবিবার সকাল ৮টার দিকে তার ছেলে এবং জামাইসহ তিনজন হাটের পাশে থেকে একটি সিএনজি নিয়ে গাবতলির দিকে রওনা হন। কিন্তু পথেই ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা।

ছিনতাইয়ের ঘটনার শিকার ওই সিএনজিতে থাকা বাচ্চু শেখ ফিরে এসেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ২৮ লাখ টাকা নিয়ে তারা তিনজন একটি সিএনজিতে করে গাবতলি যাচ্ছিলেন। কিন্তু আসাদ গেট এলাকায় যাওয়ার পরে হঠাৎ চালক সিএনজি থামিয়ে দিয়ে বলে ইঞ্জিনে সমস্যা। এই বলে চালক সিএনজি থামিয়ে নামেন। সঙ্গে সঙ্গেই দুইজন লোক এসে বলে তোরা ছিনতাইকারী। সিএনজি থেকে নেমে আয়। এমন কথা শুনে তারা নিজেদের গরু ব্যবসসায়ী পরিচয় দেয়।

বাচ্চু শেখ জানান, তবুও কথা না শুনে চেক করার নাম করে সিএনজি থেকে নামায়। এরপর একটি স্থানে নিয়ে তারা নানা প্রশ্ন করা শুরু করে। ইতিমধ্যে সিএনজি চালক টাকার ব্যাগসহ লাপাত্তা হয়েছে যায়। পরে তারা চিৎকার দেওয়া শুরু করলে উপস্থিত ব্যক্তিরাও দ্রুত সেখানে থেকে সটকে পড়েন।

ভুক্তভোগী হানিফ শেখ জানান, ঘটনার পরে তারা দ্রুত বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে হাটের পুলিশ সদস্যদের পরামর্শে মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার ছেলে।

এ বিষয়ে মোহাম্মাদপুর থানার পরিদর্শক অপারেশ মো. শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না ভিকটিমরা। সে কারণে মোহাম্মাদপুর থানার একটি টিম ও শেরে-ই-বাংলা নগর থানার অপর একটি টিম ঘটনাটি তদন্তে কাজ করছে।’

এমআই