মিরপুর বস্তির আগুনে পুড়ে ছাই শতাধিক বাড়ি, আহত ৪

‘জানটা নিয়া বাইর হয়ে আসছি শুধু’

‘জানটা নিয়া বাইর হয়ে আসছি শুধু’

রাজধানী মিরপুর ৭ নম্বরের চলন্তিকা মোড়ের কাছে একটি বস্তিতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগুন লাগার প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট কাজ করেছে। র‍্যাব, পুলিশ, ওয়াসা ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এ ঘটনায় আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন: রফিক, কবির (৩৫) ও হাবীব (১৯)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আগুনে এর মধ্যেই পুড়ে গেছে কয়েক শ বাসা-বাড়ি। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তির বাসিন্দারা রাস্তায় বসে আহাজারি করছেন। খুব কম বস্তিবাসীই নিজের আসবাবপত্র রক্ষা করতে পেরেছেন।

বস্তির বাসিন্দা মাহমুদা আক্তার বলেন, সন্ধ্যার দিকে দুই ছেলেকে নিয়ে বাসাতেই ছিলেন। এর মধ্যেই হঠাৎ আগুন লেগেছে বলে হইচই শুনতে পান। চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখেন, আক্তার মিয়ার বস্তি এলাকায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। প্রাণ বাঁচাতে ছেলেদের নিয়ে দৌড়ে আরামবাগ আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর সড়কে চলে আসেন।

মাহমুদা বলেন, ‘জানটা নিয়া বাইর হয়ে আসছি শুধু। আর কিছুই বাঁচাতে পারি নাই। টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্র সব আগুনে পুড়ে গেছে। যখন দৌড়ে পালাই, আগুন যেন আমাদের তাড়া করছিল। আমরা যত দৌড়াই, আগুনও তত পেছন পেছন ছুটে আসে। মুহূর্তের মধ্যেই সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।’

বস্তির আরেক বাসিন্দা রিকশাচালক তৌহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সারা দিন রিকশা চালানোর পর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরেছিলাম। ঘরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই চারপাশের মানুষকে দৌড়ে পালাতে দেখি। খানিক দূরের আগুনও চোখের পলকে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।’

এর আগে রাত সোয়া আটটার দিকে ঢাকা মহানগর ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে কর্তব্যরত কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দেয়।

আগুনের খবর পেয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সাংসদ ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সহায়তা আশ্বাস দেন।