চোখে টেস্টার ঢুকিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হলো যুবককে

চোখে টেস্টার ঢুকিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হলো যুবককে

পূর্ব শত্রুতার জেরে বেল্লাল হোসেন ওরফে মিলন (১৮) নামে এক যুবকের চোখে টেস্টার ঢুকিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের বানিয়ারচালা রাজাবাড়ি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

সোমবার মিলনের মা জাহানারা বেগম ও বড় বোন নাছরিন বলেন, বানিয়াচালা রাজাবাড়ি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মামুন (২৩), মাজেদ দেওয়ানের ছেলে আলামিন (১৯) ও দাড়িয়াপুর গ্রামের লুলু হোসেনের ছেলে কবির হোসেন (৩৫) গংদের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ জন্য প্রতিশোধ নিতে মামুনের নেতৃত্বে মিলনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন আসামিরা।

এরপর গত ১২ এপ্রিল বিকালে মামুন, আলামিন ও কবির মমিননগরে অবস্থিত নিউটেক্স গ্রুপের সামনে আলিম মুনসির বাসায় নিয়ে যান মিলনকে। বাসার ছাদে নিয়ে মিলনের হাত-পা বেঁধে প্রথমে টেস্টার ঢুকিয়ে দুটি চোখ অন্ধ করে দেন মামুন, আলামিন ও কবির। এরপর মিলনকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

মিলনের পরিবার আরো অভিযোগ করে বলে, সে সময় ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য আসামিরা মিলনকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারকে ফোন করে জানায়, সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হয়েছে। আপনারা হাসপাতালে যান। মিলনের পরিবার হাসপাতালে আসার আগেই তারা পালিয়ে যায়। মিলনের বাবা গিয়াস উদ্দিন, মা জাহানারা বেগম, বোন নাছিনসহ পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এসে জানতে পারেন, মিলনকে অন্ধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

মিলনের মা জানান, কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তার দুটি চোখ অন্ধ হয়ে যায়।

ঘটনার পর মিলনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে মামুন, আলামিন ও কবির গংদের আসামি করে গত ৯ মে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলার পর থেকেই মিলনের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও চাপ সৃষ্টি করে আসছে আসামিরা।

জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, মামলার পর আসামিরা উল্টো তাদের নামে তিনটি মিথ্যা মামলা করে পুলিশ দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

এ ব্যাপারে মামুন গংদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তারা পলাতক থাকায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে মির্জাপুর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার পর আসামি মামুন ও আলামিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি কবির পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এসআই আরো জানান, পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে আসামি পক্ষ ১০৭ ধারায় তিনটি মামলা করেছেন বাদীর বিরুদ্ধে। পুলিশ মিলনের পরিবারকে কোন হয়রানি করছে না বলে দাবি করেন তিনি।

এমআই