লজ্জার হাত থেকে বাঁচল না বাংলাদেশ

লজ্জার হাত থেকে বাঁচল না বাংলাদেশ

একমাত্র টেস্ট ম্যাচে ২২৪ রানের ঐতিহাসিক জয় পেলো বাংলাদেশ। টেস্ট স্ট্যাটাস লাভের পর এটাই ছিল দুদশের প্রথম মুখোমুখি হওয়া। আর সে টেস্ট ম্যাচটি বিশাল ব্যবধানে জিতে ইতিহাস গড়ল আফগানিস্তান।

আগের দিন কথা ছিল, বৃষ্টি যদি বাংলাদেশের হয়ে খেলে, তবে ম্যাচটি ড্র হবে। কিন্তু পঞ্মদিন বৃষ্টিও হলো বাংলাদেশও হারল। সমস্যা হলো, একতরফাভাবে বৃষ্টি হয়নি। মাঝে একটু আধটু খেলার সুযোগি দয়েছে আবহাওয়া। ঐ একটু আধটু সুযোগই যথেষ্ট ছিল বাংলাদেশকে ঘায়েল করতে।

শেষ দিন বাকি চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই করতে নেমে ১৭৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

দিনের শুরু থেকেই বৃষ্টি। মাঝে খেলা হয়েছে ১৩টি বল। মূল কাজটা সেরে দিয়েছিল বৃষ্টিই। বাকীটা করতে হতো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। হার এড়াতে হলে শেষ ১৮.৩ ওভার খেলতে হতো। কিন্তু সে পথে হাঁটেনি টাইগাররা। উইকেটে নেমেই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রান করার তাড়া দেখা গিয়েছে। নেমেই প্রথম বলে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল কাট করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এরপর শেষ তিন উইকেট তুলে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি আফগানদের।

শেষ বিকেলের বাকী কয়টি ওভার টিকে গেলে জুটবে ড্রয়ের সান্ত্বনা। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা সে পথে হাঁটেননি। উইকেটে নেমেই রানের জন্য তড়িঘড়ি করছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মাঝে জীবনও পেয়েছেন। কিন্তু রশিদ খানের গুগলি বুঝতে না পেরে পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। রিভিউ নিয়েছিলেন। লাভ হয়নি। ২৮ বলে ১টি চারের সাহায্যে ১২ রান করেছেন মিরাজ।

ব্যাটে লেগেছিল বল। কিন্তু আগেই রিভিউ নষ্ট করে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাই বাধ্য হয়েই মাঠ ছাড়তে হলো তাইজুল ইসলামকে। রশিদ খানের বল ব্যাটে লেগে প্যাডে লাগার পরও আউট দিলেন আম্পায়ার। ফলে বড় হারের দিকে আরো এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

তবে এক প্রান্তে চেষ্টা করেছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু তার প্রতিরোধ যথেষ্ট ছিল না। আম্পায়ায়ের ভুলে তাইজুল বিদায়। আর মিরাজ আউট হয়েছেন তড়িঘড়ি করে। ফলে ২২৪ রানের বিশাল হারই দেখতে হলো সাকিবের দলকে।

দিনের খেলা বাকী ছিল আর ৪ ওভার। রশিদ খানের বলটি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলতে চেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় শর্ট লেগে দাঁড়ানো ইব্রাহিম জাদরানের হাতে। বল ধরেই ছুট মাঠে। সঙ্গে দৌড়ান রশিদ খানও তার সতীর্থরাও। কারণ এর মধ্যেই যে দল পেয়েছে ঐতিহাসিক জয়। ৫৯ বল মোকাবেলা করে ১৫ রান করেছিলেন সৌম্য।

অন্য দিকে আফগানিস্তানের জয়ের মূল নায়ক রশিদ খান। দ্বিতীয় ইনিংসেও পেয়েছেন ৬ উইকেট। প্রথম ইনিংসেও পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। দারুণ বোলিং করেছেন তরুণ জহির খান। ভালো সমর্থন দিয়েছেন শেষ টেস্ট খেলতে নামা মোহাম্মদ নবি।

২০১০ সালে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ, ২০১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ২০১৭ সালে আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ লাভের পর ভারতের বিপক্ষে গেল বছর অভিষেক টেস্টে খেলতে নেমেছিল আফগানিস্তান। ওই ম্যাচটিতে একতরফা হারতে হয়েছিল আফগানদের৷ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নেমে প্রথমবার টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি৷ ঠিক তৃতীয় টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে নেমেই তুলে নিলো দ্বিতীয় জয়।