১৫ দিনে তিস্তায় বিলীন সুন্দরগঞ্জের ৫ শতাধিক ঘর

১৫ দিনে তিস্তায় বিলীন সুন্দরগঞ্জের ৫ শতাধিক ঘর

ঠেকানো যাচ্ছে না তিস্তার ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চরবাসী। গত ১৫ দিনের ভাঙনে পাঁচ শতাধিক বসত বাড়িসহ হাজারও একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে হাজারও বসতবাড়ি ও আবাদি জমি। ভয়াবহ বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার লাগামহীন ভাঙন চরবাসীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর থেকে উপজেলার শ্রীপুর, হরিপুর, বেলকা, চন্ডিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে ভাঙন শুরু হয়। পানি যত কমছে, ভাঙন ততই বাড়ছে। বিশেষ করে শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

শ্রীপুর ইউনিয়নের পুঠিমারী গ্রামের রমজান আলী জানান, তার ৫০ বছর বয়সে তিনি ১০ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে চলতি বছরেই তিনি দুইবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি আর নদী ভাঙন মোকাবেলা করতে পারছেন না বলে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।

কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, 'নদী পাড়ের মানুষ আমি নিজে। আমি জানি নদী ভাঙনের কষ্ট এবং জ্বালা যন্ত্রণা। নদী ভাঙন রোধে সরকারের বড় পদক্ষেপ ছাড়া আমাদের পক্ষে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়।'

গত বৃহস্পতিবার নদী ভাঙন রোধে উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের পুটিমারি গ্রামে এলাকাবাসী বিশেষ মোনাজাত ও নামাজ আদায় করেছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মজিবর রহমান জানান, নদী ভাঙন রোধ, সংস্কার, সংরক্ষণে আসলে বৃহৎ প্রকল্পের প্রয়োজন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তবে এর মধ্যে ৪০৬ কোটি টাকার একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী বলেন, 'ইতিমধ্যে আমরা ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ফেলেছি বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ভাঙনের বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।'

গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, গত ১১ সেপ্টেম্বর জনস্বার্থে মহান সংসদে নদী ভাঙন বিষয়ের ওপর জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশ উপস্থাপন করা হয়। জবাবে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী সুন্দরগঞ্জের নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, নদী ভাঙন রোধ, বাঁধ সংস্কার ও সংরক্ষণ বাবদ ৪০৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।

এমজে/