উপাচার্যের নিজ পদে থাকার অধিকার নেই : ড. জামিলুর রেজা

উপাচার্যের নিজ পদে থাকার অধিকার নেই : ড. জামিলুর রেজা

উত্তাল বুয়েটে যান বরেণ্যজন ও বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি তার প্রিয় ক্যাম্পাসের ভয়ার্ত দশায় ক্ষুব্ধ, আহত। তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে উপাচার্যের দায়িত্ব শিক্ষার্থীর বাবার মতো। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য এ বিষয়ে নির্লিপ্ত থেকেছেন। এ ঘটনার পর আমি মনে করি, উপাচার্যের নিজ পদে থাকার কোনো অধিকার নেই।’

অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বুয়েটের হলগুলোতে এ ধরনের অত্যাচার চলে আসছে বলে শোনা যাচ্ছে। এখানে ভয়ের পরিবেশ চলছে। শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে ভয় পায়। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতা।’ তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব কিছুই জানত; কিন্তু এত দিন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ঘটনার দিন পুলিশকে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বুয়েটে এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছি।’

দুপুরে বুয়েট ক্যাম্পাসে বুয়েটের ভিসির পদত্যাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি বুয়েট অ্যালামনাইয়ের পক্ষ থেকে। তিনি এ সংগঠনের সভাপতি। আবরার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সাতটি দাবি পাঠ করে শোনান তিনি। আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ে বিচার করার জোর দাবি জানানো হয়।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব ছাত্রকে অবিলম্বে বুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গসংগঠনভিত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া বুয়েট প্রশাসনকে ঐতিহ্য পরিপন্থী যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও প্রভাবমুক্ত রাখার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। ৫ নম্বর দাবির শুরুতে বলা হয়, ‘বুয়েট অ্যালামনাই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘদিনের নির্লিপ্ততা, অব্যবস্থা ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ব্যর্থতার ফল। অতীতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের তদন্ত, বিচার ও শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে উপাচার্যসহ বুয়েট প্রশাসনের ধারাবাহিক অবহেলা ও ব্যর্থতা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের মদদ জুগিয়েছে।’

অবিলম্বে উপাচার্যের অপসারণসহ প্রশাসনের আমূল পরিবর্তন করে এ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মান অতীতের মতো সমুন্নত রাখতে সুযোগ্য, নির্ভীক ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের পদায়ন করার দাবি জানায় বুয়েট অ্যালামনাই। এ ছাড়া র‌্যাগিং ও অন্যান্য অজুহাতে ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতন নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং ক্যাম্পাসে সব ছাত্রের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

আবরার হত্যাসহ এর আগে সংঘটিত অন্যান্য ছাত্র নির্যাতনের ঘটনার ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ বিচারকার্য অবিলম্বে সম্পন্ন করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিও জানায় সংগঠনটি।

 

এমজে/