পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ (ভিডিও)

পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ (ভিডিও)

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন ও খুলনা উপকূল অতিক্রম করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও সামান্য উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে (সুন্দরবনের কাছ দিয়ে) পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা উপকূল অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বেশ কিছু এলাকার ফসলি জমি ও লোকালয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

রবিবার সকাল আটটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রভাগ খুলনা জেলার সুন্দরবনে অবস্থান করলেও এর আশপাশের এলাকায় প্রবল শক্তিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এর আগে ভোর ৫ টায় এটি খুলনা ও বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে আঘাত হানে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমশঃ দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টির গতি কমে ৮০-১০০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। এটি ঘণ্টায় প্রায় আট কিলোমিটার বেগে উত্তর-পূর্বদিকে এগোচ্ছে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে সাদরের পানি প্রবেশ করেছে।

উপকূলের সব জেলায় উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া নৌবাহিনীর ১০টি যুদ্ধজাহাজ উদ্ধারকাজে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে অন্তত ১৮ লাখ মানুষ। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রয়েছে মেডিকেল টিম।

‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ থেকে শক্তি কিছুটা কমে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ হয়ে বুলবুল যখন বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে, তখন বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। মোংলা ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপত্সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম বন্দরকে ৯ নম্বর মহা বিপত্সংকেত দেখানো হয়েছে। বুলবুল যখন বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে, তখন দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে ঘূর্ণিঝড়টির বিষয়ে জানানো হয়, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো নয় নম্বর মহবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া বুলবুল অতিক্রমের সময় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এসব এলাকার নিন্মাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগ পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

সরাসরি বুলবুলের অবস্থান দেখতে এখানে ক্লিক করুন......

এমজে/