গ্রেপ্তারের হুমকিতে দিশেহারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরিবার

গ্রেপ্তারের হুমকিতে দিশেহারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরিবার

চট্রগ্রাম থেকে শরীফ হায়দার শিবলু : চট্রগ্রাম পূর্বাঞ্চলের রেল কতৃপক্ষ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীকে (আর এন বি) পাঠিয়ে উচ্ছেদ কৃত বস্তিবাসীকে ২ দিনের মধ্যে এলাকা ত্যাগ না করলে গ্রেপ্তার করার হুমকি দিয়ে মাইকিং করিয়েছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ!
.
গত ৬ ও ৭ নভেম্বর রেলওয়ে কতৃপক্ষ চট্টগ্রাম ১৩, নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বিভিন্ন রেলওয়ে এলাকায় বস্তি উচ্ছেদ করার কারনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জীবিকার তাগিদে ছুটে আসা শ্রমজীবী স্বল্প আয়ের হাজার হাজার মানুষ দূর্যোগময় আবহাওয়া কারনে খোলা আকাশের নিছে মানবেতর জীবন যাপন করলেও তার উপর আজকে রেলওয়ে কতৃপক্ষের গ্রেফতারের হুমকিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এসব ভুমি হিন অসহায় মানুষ গুলো!

বর্তমানে সারাদেশে জেএসসি ও জেডিসি পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে পুরো ওয়ার্ডে বস্তিবাসীর পরিবারের কয়েক হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীর পরিক্ষা চলাকালের কারনে কোথাও যেতে না পেরে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও খোলা আকাশের নিছে থাকতে বাধ্য হয়েছে।

তারপরও রেলওয়ে কতৃপক্ষ দূর্যোগময় আবহাওয়া ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে মানবিকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব বস্তিবাসীকে ২ দিনের মধ্যে এলাকা ত্যাগ করার জন্য গ্রেফতারের হুমকি কতটা যুক্তি সম্পূর্ন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

এই উচ্ছেদ অভিযানে সাধারন রেলওয়ে কর্মচারীদের কিছু সেমি পাকা ঘর ও বস্তিবাসীর সমস্ত ঘর উচ্ছেদ করলেও রেলওয়ের শ্রমীকলীগ ও প্রভাবশালী কর্মচারীদের গড়ে তোলা বিলাসবহুল কোয়াটার গুলোতে বিন্দু পরিমাণ আচড়ও পড়েনি!

এসব কোয়াটারের এক একটিতে বাউন্ডারি ওয়ালে সিসিটিভি ক্যামেরা সহ ডিজাইন করে খোদাই করে গড়ে তোলা বাউন্ডারি ওয়ালের ভিতরে আছে ৫০ থেকে ৬০ রুম।

একটি কোয়াটারের জন্য রেলওয়ে কতৃপক্ষের একটি গ্যাসের চুলা ব্যাবহার করার অনুমতি থাকলেও ৪ থেকে ৫ টা চুলা ব্যাবহার করলেও রেলওয়ে কতৃপক্ষ এসব প্রভাবশালী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থাই নেয়নি!

অথচ রেলওয়ের অকার্যকর জায়গায় সাধারণ মানুষের বস্তি গুলো সম্পূর্ন গুড়িয়ে দেয়!

রবিবার দুপুরে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আর এন বি) এসে ২ দিনের মধ্যে এলাকা ত্যাগ না করলে গ্রেপ্তার করার মাইকিং করায় দিশেহারা পড়েছে অসহায় এই মানুষ গুলো।

এব্যাপারে আমবাগান এলাকার বস্তির লোকজনের পতিক্রিয়া জানতে চাইলে রোকেয়া নামের এক বৃদ্ধ মহিলা সহ আরও লোকজন জাষ্ট নিউজ বিডি ডটকমের প্রতিবেদকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বস্তির অসহায় মানুষ গুলো!

তারা জাষ্ট নিউজের এই প্রতিবেদককে জানান আমাদের গ্রামের বাড়িতে কোন ঘর ভিটা নেই আমরা দীর্ঘদিন গ্রাম থেকে এসে স্বপ আয়ের কারনে এসব বস্তিতে এসে শত কষ্টের মধ্যেও কোন রকম ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করে আসছি কিন্তু রেলওয়ে কতৃপক্ষ আমাদের সময় না দিয়ে বস্তি উচ্ছেদের পর এখন আবার এলাকা ত্যাগ না করলে গ্রেপ্তারের হুমকি দেয়ায় আমরা এখন কোথায় যাবো বুঝতে পারছিনা!

বস্তির এসব অসহায় মানুষ গুলো ও তাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মানবিক হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এমজে/