দাম বাড়ার আশঙ্কা পুরোপুরি গুজব

বাড়তি লবণ নিয়ে বিপাকে কোম্পানি ও চাষিরা

বাড়তি লবণ নিয়ে বিপাকে কোম্পানি ও চাষিরা

দেশে লবণের কোনো ঘাটতি নেই। বরং বাড়তি লবণ নিয়ে কোম্পানিগুলো ও চাষিরা বিপাকে আছে। দাম বাড়ার আশঙ্কাটি পুরোটাই গুজব। এমনটাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছে দেশের লবণ বিপণনকারী শীর্ষ চার কোম্পানি।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ করেই লবণ কেনার হিড়িক পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলো জানায়। মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের দোকানগুলোতে লবণ কিনতে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যায়।

সকালে রাজধানীর কাজীপাড়া, আগারগাঁও, তেজগাঁও ও বেগুনবাড়ি এলাকার বাজার ও মুদি দোকানেও লবণ কিনতে ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলায় লবণের মূল্যবৃদ্ধির খবর আসছে। বাড়তি দামে বিক্রি করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানাও করছে।

এসিআই সল্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ গুজব। সরবরাহের কোনো সমস্যা নেই। আমরা একটি পয়সাও দাম বাড়াইনি।’ তিনি বলেন, ক্রেতাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

মোল্লা সল্টের মহাব্যবস্থাপক আবদুল মান্নান বলেন, কক্সবাজারে চাষিদের কাছেই ৪ লাখ টনের মতো লবণ মজুত আছে। বাজারে লবণের দাম নেই। লবণের চাহিদা কম। এ কারণে অনেক চাষি এখনো নতুন মৌসুমের লবণ চাষ শুরু করেনি।

আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা দাম বাড়াইনি। সরবরাহ ঠিক আছে। মিল আগামী দুই মাস চালানোর মতো লবণ আমাদের হাতে আছে।’

কনফিডেন্স সল্টের মহাব্যবস্থাপক মো. সামসুদ্দিন বলেন, ঘাটতি তো নেই-ই, উল্টো বিক্রি কম। এর কারণ শুল্কমুক্ত বন্ডের লবণ বাজারে চলে আসছে। দেশি কৃষক ও মিলমালিকেরা বিপাকে আছে। তিনি বলেন, ‘মিলগুলোও খুব খারাপ অবস্থায় আছে।’

এদিকে আজ শিল্প মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টনের বেশি ভোজ্য লবণ মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের লবণ চাষিদের কাছে ৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন লবণ মিলের গুদামে ২ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, দেশে প্রতি মাসে ভোজ্য লবণের চাহিদা কম-বেশি এক লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে লবণের মজুদ আছে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন।

পূবালী সল্টের মালিক পরিতোষ কান্তি সাহা বলেন, ‘আমার কাছে যারাই লবণের কথা জানতে চাইছে, তাদের বলছি কত লাগবে নেন। কোনো অভাব নাই।’ তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে অপরিশোধিত লবণের বস্তা (৭৫ কেজি) ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। এ দামে কৃষকের খরচই ওঠে না।

বাজারে এখন বিক্রি কোম্পানির সবচেয়ে ভালো মানের লবণের প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) লেখা ৩৫ টাকা। আর সাধারণ লবণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা। পরিতোষ কান্তি সাহা এ দরের বেশি দামে লবণ না কিনতে পরামর্শ দেন ক্রেতাদের।