পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের আশ্বাসে বাস-ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। ফলে আজ থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল করবে। লাইসেন্স নবায়নে সময়সহ নতুন সড়ক পরিবহন আইন আংশিক পরিবর্তনের বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বুধবার দিবাগত রাতে ধানমন্ডির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজস্ব বাসভবনে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তারা।

বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের এমন তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা আইনের কিছু ধারা সংশোধনের দাবি জানিয়েছিলো। এসব দাবি নিয়ে তারা ৯ দফা দাবি প্রস্তাব করেছিলো আমাদের কাছে। তারই ভিত্তিতে তারা কর্মবিরতিও পালন করেছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, পরিবহনের মালিক শ্রমিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। যে সব দাবিগুলো সংগত সেগুলোর মধ্যে কয়েকটা মেনে নিতে সময় বেধে দেয়া হয়েছে। আর বাকি দাবি অনুসারে আইন সংশোধনের বিষয়ে বেশকিছু সুপারিশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠাবো। এ আশ্বাসে সন্তুষ্ট হয়ে তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চলাচল করবে।

দাবিগুলো সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যে লাইসেন্স দিয়ে তারা গাড়ি চালাচ্ছে সেগুলোর অনেকগুলো সঠিকভাবে বিআরটিএ সময়মত দিতে পারে নি। অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন বা নবায়নের জন্য তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিআরটিএ নির্দিষ্ট সময় মত তা দিতে পারে নি। ফলে তারা সঠিক ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদেরকে লাইসেন্সগুলো ঠিক করতে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছে। আমরা তা মেনে নিয়েছি। এখন তারা বর্তমানে যে লাইসেন্স আছে সেগুলো দিয়ে গাড়ি চালাতে পারবে।

আবার অনেকে গাড়ির ফিটিনেস হালনাগাদ করার জন্য নিয়মমাফিক কর প্রদান করে নি। ফলে তাদের কাছে ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই গাড়ির ফিটনেস থাকা সত্ত্বেও। তাদের ক্ষেত্রেও এ সমস্যা সমাধানে বা বিআরটিএ’র ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত তাদের যে ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে সেগুলো দিয়ে গাড়ি চালাতে পারবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নতুন আইনের ১২৬টি ধারার ৯টি ধারায় তাদের আপত্তি ছিল। আইনটি ইতোমধ্যে প্রয়োগ হয়ে গেছে। আর যে ধারাগুলো সংশোধনের দাবি এসেছে সেগুলো বিচার বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠাবো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, আজ বৈঠকের মাধ্যমে প্রণীত আইনের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত মোটেও আইন পরিপন্থী নয়। আইনটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু অসঙ্গতি আমাদেরও রয়েছে যেমন, পার্কিং এর পর্যাপ্ত জায়গা আমরা করতে পারি নি। সেগুলোই বিবেচনা করা হবে।

এ সময় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষে রুস্তম আলী খান বলেন, নতুন আইন নিয়ে দীর্ঘক্ষণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি দাবিগুলো ইতিবাচকভাবে মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ কারণে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিচ্ছি।

এছাড়া মালিক ও শ্রমিকদের আরেক নেতা তালুকদার মোহাম্মদ মনির বলেন, আমরা কোনভাবেই কর্মবিরতির পক্ষে না। আমাদের অনুমতি ছাড়াই শ্রমিকরা গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। তাদেরকে ঠেকানোর উদ্দেশ্যে আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলাম।

এমজে/