ওসির বিরুদ্ধে দুদকে সাক্ষী দিতে গিয়ে হামলার শিকার ৩ ব্যক্তি

ওসির বিরুদ্ধে দুদকে সাক্ষী দিতে গিয়ে হামলার শিকার ৩ ব্যক্তি

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলাকালীন সাক্ষীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.ন.ম শহিদ উদ্দিন ছোটনের নেতৃত্বে এ হামলায় সাক্ষী রুহুল আমিন, দেলোয়ার ও মফিজ আলম আহত হন। আহতদের কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে হামলার ঘটনাটি ঘটে।

হাইকোর্টের আদেশে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ আরো বেশ কয়েকটি অভিযোগে ওসি দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে তদন্তকালে সাক্ষীর ওপর হামলার ঘটনাটি নিশ্চিত করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন।

শরিফ উদ্দিন বলেন, ওসি দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে কুতুবদিয়ার মনোয়ার ইসলাম মুকুল নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। তার তদন্তভার দেওয়া হয় চট্টগ্রামের দুদক কার্যালয়ে। আমার নেতৃত্বে দুদকের একটি দল ওসি দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও নিরীহ লোকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের তদন্ত করতে সকালে কুতুবদিয়ায় আসি। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে আমরা কথা বলি। অনেকজন সাক্ষী দিয়েছেন। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওসির পক্ষ হয়ে বড়ঘোপ চেয়ারম্যান ছোটনের নেতৃত্বে একদল লোক আমাদের কাছে সাক্ষী দেওয়া তিনজনের ওপর হামলা করে। এতে তারা গুরুতর আহত হন। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে আমরাই হাসপাতালে ভর্তি করাই।

তিনি বলেন, হামলার বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে আর প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ছোটনকে দ্রুত আটক করার জন্য বলা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ওসি দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করার পর থেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর সাক্ষীদের সাক্ষী না দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান ছোটনের দ্বারস্থ হন। তিনিই সাক্ষীদের ভয় দেখিয়েও ব্যর্থ হওয়ার পর ওসির নির্দেশে চেয়ারম্যান ছোটনসহ একদল দুর্বৃত্ত সাক্ষীদের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে।

এ বিষয়ে ওসি দিদারুল ফেরদৌস বলেন, সকালে দুদক আমার বিরুদ্ধে তদন্তকালে তাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করি। বিকেলে জানতে পারি, বেশ কয়েকজন সাক্ষীকে হামলা করা হয়েছে। দুদকসহ আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। চেয়ারম্যান ছোটন কোনোভাবে আমার পক্ষ হয়ে হামলা করেনি। তিনি কেন হামলা করেছে তা আমার জানা নাই।

হাইকোর্টে রিটকারী মনোয়ারুল ইসলাম মুকুল বলেন, নিরীহ লোকদের অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ওসির বিরুদ্ধে প্রথমে দুদক কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করি। তারা কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় হাইকোর্টে ওসির বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন দায়ের করি। দুদকের একটি টিম সকালে তার তদন্ত করতে আসলে ওসির নির্দেশে চেয়ারম্যান ছোটন দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। সর্বশেষ ওসির বিপক্ষে সাক্ষী দেওয়ায় তিনজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন চেয়ারম্যান ছোটন।

এ বিষয়ে জানতে বড়ঘোপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছোটনের মোবাইলে যোগাযোগ সংযোগ রিসিভার না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এমজে/