ভারতের ওপর এতটা ভরসা করা ঠিক হয়নি: কৃষিমন্ত্রী

ভারতের ওপর এতটা ভরসা করা ঠিক হয়নি: কৃষিমন্ত্রী

বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘সংকটটি পর্যালোচনা করে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে হয়তো আজকের এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তা ছাড়া ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেবে, এটাও কারো জানা ছিল না। ভারতের ওপর এতটা ভরসা করা আমাদের ঠিক হয়নি।’

বুধবার সচিবালয়ে পেঁয়াজের সংকট নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। ওই সময় তিনি কৃষি উৎপাদনে কৃষকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরেন। এর আগে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে আলুর রপ্তানি নিয়ে বৈঠক করেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘গত মৌসুমে অকাল বৃষ্টির কারণে কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজ জমিতেই নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষক পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারেনি। ওই সময় যদি আমরা ভারতের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে রাখতাম, তাহলে এ সংকট হতো না।’

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ডাই অ্যামুনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সারের দাম ডিলার এবং কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজিতে ৯ টাকা করে কমানোর ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলুর ফলন, রপ্তানি ও সংরক্ষণের বিষয়ে বৈঠক করেন।

ড. রাজ্জাক বলেন, ‘এখন কৃষক পর্যায়ে ডিএপি সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা এবং ডিলার পর্যায়ে ২৩ টাকা থেকে কমিয়ে প্রতি কেজি ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

সারের দাম কমানোয় সরকারকে অতিরিক্ত ৮০০ কোটি ভর্তুকি দিতে হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর সরকার কৃষিকাজের সারে কৃষকদের সাত হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়।’

মন্ত্রী জানান, কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস, সুষম সার ব্যবহারের কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ, গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ পরিবেশবান্ধব টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার ডিএপি সারের মূল্য পুনরায় হ্রাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের কথা তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকদের প্রণোদনাসহ আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। সামনের দিনে এ ধরনের সংকট আর হবে না। এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠেছে। মূল পেঁয়াজ আগামী দুই মাসের মধ্যেই উঠবে। তখন দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে ড. রাজ্জাক বলেন, ‘দেশে মোটা চালের কেজি এক টাকাও বাড়েনি। আগে যা ছিল, তাই আছে এখনো। কিন্তু মানুষ চিকন চাল খায়। আমরা খাদ্য সহায়তা হিসেবে ভিজিএফ কার্ডের অধীনে যেসব মোটা চাল বিতরণ করি, গ্রামের মানুষ সেগুলোও বিক্রি করে চিকন চাল কিনতে যায়। ফলে চিকন চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে।’