রাঙামাটিতে ছাত্রলীগ-পুলিশ সংঘর্ষ, সাংবাদিক আহত

রাঙামাটিতে ছাত্রলীগ-পুলিশ সংঘর্ষ, সাংবাদিক আহত

 

চট্টগ্রাম, ১৩ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুপায়ন চাকমাকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিক, পুলিশ, পথচারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাঙামাটির মারি স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় তার ওপর অতর্কিত এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত ওই ছাত্রলীগ নেতাকে রাঙামাটি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে রাঙামাটি সদরের আলিফ মার্কেট এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীদের লাঠির আঘাতে আহত হন সমকালের রাঙামাটির সাংবাদিক সত্রং চাকমাও।

এদিকে, পুলিশি হামলার প্রতিবাদে এবং এসপি ও কোতোয়ালী থানার ওসির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করেছে তারা।

ঘটনার জের ধরে সোমবার সন্ধ্যার পর শহরের বনরূপা, হ্যাপির মোড়, জজ আদালত প্রাঙ্গণ, কলেজ গেটসহ কয়েক স্থানে এসব বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় শহরের পরিস্থিতি থমথমে হয়ে যায়। জনমনে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

এদিকে, কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উস্কানিতে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রলীগ। হামলায় ছাত্রলীগের ৩০-৪০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করে তারা।

অপর পক্ষে পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করে পুলিশ। আহত অনেককে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

সুপায়ন চাকমার ওপর হামলার ঘটনায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির সভাপতি জুয়েল চাকমা। তিনি বলেছেন, হামলার ঘটনায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা জড়িত নয়। তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সুপায়নের সঙ্গে প্রতিপক্ষের বিরোধ হয়। সে ঘটনার জের ধরে তাকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সন্ধ্যার দিকে স্টেডিয়াম এলাকায় সুপায়ন চাকমার ওপর হামলার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় রাস্তা অবরোধ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করে পুলিশ। এতে পুলিশ-ছাত্রলীগ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পুলিশ ২০-৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে শহরে সব ধরনের যান চলাচল এবং দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

অন্যদিকে পুলিশের ওপর লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের বনরূপা এলাকায় ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সমকালের সাংবাদিক সত্রং চাকমার ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। উদ্ধারের পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান তার সহকর্মীরা।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার সুজন বলেন, পুলিশ বিনা উস্কানিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ হামলা চালায় পুলিশ। তিনি এ ঘটনার দায়ে পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান এবং কোতোয়ালী থানার ওসি সত্যজিৎ বড়ূয়াকে প্রত্যাহারসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

পুলিশের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/০৯৫২ঘ.)