তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল

তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে শুক্রবার ফজরের নামাযের পর এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে পুরো ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পুর্ণ হয়েছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লিরা ময়দানের পাশের রাস্তা আব্দুল্লাহপুর ব্রিজের পর থেকে রাস্তার বাম পাশের পুরো ফুটপাতে পলিথিন দিয়ে সামিয়ানা টানিয়ে, আবার কেউ কেউ সামিয়ানা ছাড়াই খোলা আকাশের নিচেই অবস্থান নিয়েছেন।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

শুক্রবার ভোর থেকে ইজতেমা ময়দানে দলে দলে আসতে শুরু করেছেন মুসুল্লীরা। রোদ ওঠার কারণে শীত কিছুটা কম হওয়ায় রাজধানীর মানুষও ইজতেমা মুখী হয়েছেন। এতে টঙ্গীসহ আশেপাশের রাস্তায় গাড়ি চলছে ধীরগতিতে।

ইজতেমা ময়দানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক কর্মী হুমায়ন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই আমবয়ান শুরু হয়েছে। আমবয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। আর বাংলায় তরজামা করেন হাফেজ মাওলানা জোবায়ের।

টঙ্গী বাটা শোরুমের সামনের ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া মুসল্লী এজাহার আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালী থেকে তাদের একটি দল এসেছে। কিন্তু মাঠে জায়গা না হওয়ায় তারা বাইরে অবস্থান নিয়েছে। প্রচন্ড শীতকে জয় করে তারা আল্লাহকে খুশি করতে সকল কষ্ট জয় করছেন। আরও বলেন, ইসলামের কাজে কষ্ট থাকবেই আর এর মাধ্যমেই আল্লাহর কাজ করে যেতে হবে।

ইজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানিয়েছেন, অন্যবারের তুলনায় এবারের ইজতেমায় মুসুল্রীর সংখ্যা বেশি। ইজতেমা মাঠের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে নতুন ১৪টি খিত্তা (নির্ধারিত স্থান) যুক্ত করার মাধ্যমে মাঠের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আর পুরো ইজতেমাকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এরপরও জায়গা না পাওয়ায় ময়দানের বাইরে রাস্তায় অবস্থান করছেন মুসল্লিরা।

আর মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য ৩১টি ভবনে আছে ৮ হাজার ৩৩১টি শৌচাগার। ১৭টি গভীর নলকূপ দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে পানি। তিনটি গ্রিড থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে মাঠে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়েছে।

মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ময়দানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা তিনদিন করে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। আগামি ১২ জানুয়ারি জোহরের নামাজের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে জোবায়ের গ্রুপের বিশ্ব ইজতেমা। ৪ দিন বিরতির পর ১৭ জানুয়ারি শুরু হবে সা’দ অনুসারীদের ইজতেমা। ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২০ সালের দুই গ্রুপের দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।

 

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে ইজতেমা ময়দানে ইয়াকুব আলী শিকদার (৮৫) নামে এক মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে।