১৪ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস

১৪ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস

শরীফ হায়দার শিবলু: ১৯৮৩ সালের এই দিনে সব ছাত্র সংগঠনগুলো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিল। আজকের দিনটিকে বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন গুলো প্রতি বছর স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন করে। ১৯৮৩ সালে এইদিনে ছাত্র বিদ্রোহে তৎকালীন শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে বাধ্য করেছিল এবং স্বৈরশাসক এইচএম এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।

১৯৮২ সালে বাংলাদেশে তৎকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট এইচএম এরশাদের শিক্ষামন্ত্রী ড.মজিদ খানের ঘোষিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু হয়।

'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী যোগ দেয়। মিছিলের সামনেই ছিলেন মেয়েরা।

সেই শান্তিপূর্ণ মিছিলটি যখন কার্জন হলের সামনে পৌঁছায়, তখন পুলিশ-বিডিআর মিলে ব্যারিকেড দেয়। তোপখানা রোডে ছিল সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। তখন শিক্ষার্থীরা সেখানে বসে বক্তৃতা দিতে শুরু করে। কিন্তু পুলিশ কোনরকম উস্কানি ছাড়াই শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। প্রথমে টিয়ারগ্যাস আর জল কামান ছোড়ে। ছাত্ররাও হাতের কাছে যা পেল, উল্টো ছুড়ে মারতে শুরু করলো। পুলিশের লাঠিচার্জের পর ছাত্ররা ব্যারিকেড ভেঙ্গে যাবার চেষ্টা করে। এরপর পুলিশ গুলিবর্ষণ আর বেয়নেট চার্জ শুরু করে।

অনেক মৃতদেহ পুলিশ ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু জয়নাল নামের একজন ছাত্রকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে তৎকালীন ছাত্রনেতারা। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেই মৃতদেহ বটতলায় নিয়ে এসে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে।

ঐ দিন বিকালে এবং পরের দিনও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে চলে পুলিশের অভিযান। পুলিশ অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করে। গ্রেফতারের পর মোজাম্মেল আইয়ুব নামের আরেকজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। আর গ্রেফতার হওয়া ছাত্র, জাফর, কাঞ্চন, দিপালী সাহা নামের একটি ছোট বাচ্চাসহ অনেকে নিখোঁজ হয়ে যায়, যাদের পরে আর কোন দিন খোঁজ মেলেনি।