বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বাতাস বাংলাদেশে

বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বাতাস বাংলাদেশে

বিশ্বের মধ্যে বাতাসের গুণগত মান সবচেয়ে খারাপ বাংলাদেশে। আরো একবার এই খেতাব অর্জন করেছে এ দেশ। আর তুলনামূলক পরিষ্কার, স্বাস্থ্য উপযোগী বাতাস রয়েছে কানাডায়। বায়ু দূষণকে ‘নীরব ঘাতক’ আখ্যায়িত করে প্রকাশিত নতুন এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।

‘২০১৯ ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্টে’ আরো বলা হয়েছে, গত বছর বিশ্বে বায়ুর গুণগত মান খারাপ ছিল বাংলাদেশে। আর সবচেয়ে দূষণের শহরের দিক দিয়ে ঢাকার অবস্থান ২১তম। রাজধানী শহরের হিসেবে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। ওই রিপোর্টে বাতাসের গুণগত মানের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ দেশের পর্যায়ক্রমে রয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মঙ্গোলিয়া।

এ তিনটি দেশ এদিক দিয়ে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আইকিউএয়ার বিশ্বজুড়ে বাতাসের গুণগত মান এবং প্রযুক্তি বিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে বাতাসের গুণগত মান নিয়ে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করে।

আইকিউএয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রাঙ্ক হ্যামেস বলেছেন, বিশ্বজুড়ে যখন সংবাদ শিরোনামে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে নতুন করোনা ভাইরাস, তখন এই নীরব ঘাতক প্রতি বছর কমপক্ষে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যুতে অবদান রাখছে।

বিশ্বের ৯৮টি দেশের ওপর প্রণীত ওই রিপোর্টে তুলনামূলক পরিষ্কার বায়ুর দিক দিয়ে কানাডার অবস্থান ৯০তম। আইকিউএয়ারের গবেষকরা মাঠপর্যায়ে নজরদারিকারী স্টেশন থেকে পাওয়া ডাটা বিশ্লেষণ করে এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন। এসব নজরদারিকারী স্টেশন থেকে বাতাসের পার্টিকুলার ম্যাটার বা পিএম ২.৫ এর মাত্রা পরিমাপ করে। এর মধ্যে রয়েছে সালফেট, নাইট্রেট এবং কালো কার্বনের মতো দূষণ। এসব পার্টিকেলের রয়েছে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাস। অথবা বলা যায়, মানুষের চুলের যে ব্যাস তার চেয়ে ৩০ গুণ কম। ফলে এসব কণা খুব সহজেই মানুষের ফুসফুসের ভেতর ঢুকে যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে বায়ু দূষণের কারণে ৪২ লাখ অপরিপক্ব মৃত্যু হয়েছে। বলা হয়েছে এর কারণ, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও ফুসফুসের সংক্রমণ। এসব মৃত্যুর মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি ঘটেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। সবচেয়ে বেশি দূষিত যে ৩০টি শহর আছে তার মধ্যে ২১টির অবস্থানই ভারতে। এসব শহরের মধ্যে ৬টিই রয়েছে দূষণের দিক দিয়ে শীর্ষ দশে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বার্ষিক টার্গেট ধরে দিয়েছে পিএম ২.৫। কিন্তু ভারত সেই মাত্রার চেয়ে গড়ে শতকরা ৫০০ ভাগ অতিক্রম করেছে। তবে দেশটির জাতীয় বায়ুদূষণ ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালে কমেছে শতকরা ২০ ভাগ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জাকার্তা ও হ্যানয় বায়ু দূষণের দিক দিয়ে প্রথমবার বেইজিংয়ের মাত্রাকে অতিক্রম করেছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, দাবানল, প্রকাশ্যে কৃষিখাতে আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলার চর্চা থেকে বায়ুর গুণগত মানের ওপর বড় রকমের প্রভাব ফেলছে। এমন দেশের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া ও চীন। এ ছাড়া লস অ্যানজেলেসে দাবানলও সেই শহরে বায়ু দূষণের সূচকের ওপর প্রভাব ফেলেছে।