একুশে শূন্যরেখায় মিলেছে দুই বাংলা

একুশে শূন্যরেখায় মিলেছে দুই বাংলা

ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : এসেছে একুশে ফেব্রুয়ারি, রাষ্ট্র সীমার বিভেদ ভুলে শূন্যরেখায় আবার মিলেছে দুই বাংলার মানুষ। বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের দিনটিতে দুই বাংলার মোহনা বেনাপোলের এই মিলনমেলায় এক সময়ের এক থাকার সুরই যেন বেজে উঠল দুই পারের বাংলাভাষীদের মনে।

বুধবার সকাল থেকেই গান, আবৃত্তি আর দুই বাংলার কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-রাজনীতিবিদ ও সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বেনাপোল আর পেট্রাপোলের শূন্যরেখা।

অমর একুশের অমর সুরের সঙ্গে মঞ্চ থেকে ভেসে আসা ‘একই আকাশ, একই বাতাস/এক হৃদয়ে একই তো শ্বাস’ গানের সুর যেন বেঁধে রাখে সবাইকে।

উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর ভারত-পাকিস্তান দুই দেশ সৃষ্টি হলে ভাগ হয়ে যায় বাংলা। পাকিস্তানের অংশে থাকা পূর্ব পাকিস্তান ১৯৭১ সালে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ হয়। পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ভারতের রাজ্য হয়ে।

২০০২ সালে ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুই বাংলার ‘ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা-পদ্মা ভাষা ও মৈত্রী সমিতির’ উদ্যোগে সীমান্তবর্তী প্রায় ২০টি সংগঠন বেনাপোল-পেট্রাপোলের এই মিলন মেলার সূচনা করে।

বেনাপোলের পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ষোড়শ বছরে এসে বড়েছে এ মিলনমেলার পরিধি; তৈরি হয়েছে আস্থা ও ভালোবাসার বন্ধন।

এপার বাংলার বেনাপোল পৌরসভা আর ওপারের বনগাঁ পৌরসভার যৌথ এ আয়োজনে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রপ্তানি টার্মিনালে তৈরি করা হয় একটি মঞ্চ। আর বেনাপোলের শূন্যরেখা থেকে ২০০ গজ ভেতরে ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চ’। বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা সেই মঞ্চে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও কয়েক ঘণ্টার জন্য যেন উধাও হয়ে যায় সীমান্তের কাঁটাতার, দুই বাংলার মানুষ সীমান্তে মিলিত হয় আলিঙ্গনে। মেতে উঠে আড্ডায়-স্মৃতিচারণে।

পরে দুই বাংলার মানুষ নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় নির্মিত অস্থায়ী শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।

 

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৬৩৫ঘ.)