বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা শুধু দেশের উন্নয়নের জন্য। এ নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সম্প্রতি এক বক্তব্যে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তার সরকার শুধু দেশের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তিত। বাংলাদেশের ক্রমবিকাশে সহায়তা করবে- এমন যেকোনো দেশের সঙ্গেই সহযোগিতামূলক কাজ করতে প্রস্তুত তার সরকার।

২০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় পরিদর্শনে আসা ভারতীয় সাংবাদিকদের এক প্রতিনিধিদলকে এসব কথা বলেন তিনি। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই।

শেখ হাসিনা বলেন, যারাই বিনিয়োগ ও সহযোগিতায় আগ্রহী, তাদের বিনিয়োগ ও সহযোগিতা আমরা চাই। আমরা দেশের উন্নয়ন চাই। আমাদেরকে জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে। কেননা, তারাই এসব উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত, চীন, জাপান এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসছে। এ নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বরং ভারতকে বাংলাদেশসহ তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পরামর্শ দেবো। যাতে করে এই অঞ্চল আরো উন্নত হতে পারে। আমরাও বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে পারি যে, আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান। দেশ দুটো সমুদ্রসীমা ও স্থলসীমান্তের মতো সমস্যা সমাধানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি বলেন, যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, আমরা আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধান করবো। যেমনটা আমরা আগে করে এসেছি। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়া গড়তে চাই। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬-২০০১ সালে তার শাসনামলে দু’দেশের মধ্যে গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তার দ্বিতীয় মেয়াদে সমুদ্রসীমা ও স্থলসীমান্ত ইস্যুগুলোর মীমাংসা হয়।

পিটিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। দু’দেশের সামরিক কর্মীদের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করতে চায় বেইজিং। এর আগে চীন জানিয়েছিল, বাংলাদেশকে ছয়টি রেল প্রকল্প তৈরির জন্য অল্প সুদে ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটি। এই রেল প্রকল্পগুলোর একটি ভারতীয় সীমান্তের কাছে।

এদিকে, নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির আশঙ্কা করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনায় ভারতের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই ভারত যেন মিয়ানমারকে তাদের বাস্তুচ্যুত লোকদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে চাপ দেয়।

তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতসহ মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে এমন পাঁচটি দেশের সঙ্গে আলোচনার নির্দেশনা দিয়েছেন।

ভারতীয় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বর্ষাকাল এগিয়ে আসছে। এই অবস্থায় রোহিঙ্গাদের এরকমভাবে (অস্থায়ী শিবিরে) রাখা বাংলাদেশের জন্য ও তাদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।

উল্লেখ্য, ভারতীয় সাংবাদিকরা কলকাতা ও নয়াদিল্লি থেকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী একটি বাংলাদেশ-ভারত মিডিয়া ডায়ালগে অংশগ্রহণ করতে এসেছেন।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/০৯১৫ঘ.)