চলন্ত বাসেই করোনা উপসর্গ নিয়ে যাত্রীর মৃত্যু, রাস্তার পাশে ফেলে দিল লাশ

চলন্ত বাসেই করোনা উপসর্গ নিয়ে যাত্রীর মৃত্যু, রাস্তার পাশে ফেলে দিল লাশ

ঢাকা থেকে জয়পুরহাটে ফেরার পথে গাড়ির মধ্যেই মারা যাওয়া এক ব্যক্তির লাশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ভেবে রাস্তায় ফেলে গেছেন বাসের চালক ও হেলপার। সোমবার ‍দিবাগত রাতে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের হিচমী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মিজানুর রহমান। তিনি নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা জাহানপুরের বাসিন্দা।

এদিকে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় লাশটি দাফনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, মিজানুর রহমান ৩-৪ দিন আগে কোমরের ব্যথার চিকিৎসা করাতে ঢাকায় যান। চিকিৎসা শেষে মাকে নিয়ে ঢাকার বিশ মাইল থেকে ২ হাজার টাকা চুক্তিতে সোমবার রাতে তিনি আহাদ পরিবহনের একটি বাসে করে জয়পুরহাটে রওনা দেন। কিন্তু রাস্তায় মিজানুর রহমান মারা যান।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই হিচমী বাজারে মা ও তার ছেলের লাশটি ফেলে দিয়ে চলে যান বাসের চালক ও হেলপার। পরে স্থানীয়রা জানতে পারলে এলাকায় অনেকটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার বলেন, রাতে তারা ডিউটি করে সাহরি খেতে যান। পরে সাড়ে ৩টার দিকে তারা এসে দেখেন, এক মাসহ তার সন্তানের লাশটি রাস্তার ধারে পড়ে আছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে একটি গণপরিবহন জয়পুরহাটে প্রবেশ করলো-এমন প্রশ্নের উত্তরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খান বলেন, ‘যদি বলি এটি ঢাকাকেন্দ্রিক সমস্যা। এরপর বলব, হাইওয়ে পুলিশ কী করলো? ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলো শহরে না ঢুকে বাইপাস হয়ে হিলিতে যায়। যে কারণে পুলিশের অনুপস্থিতিতে গত রাতে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটেছে।’

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বলেন, ‘নিহতের মায়ের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির শরীরে কোনো ধরনের করোনার উপসর্গ ছিল না। এরপরও খবর পেয়ে স্থানীয় মেডিকেল টিম তার নমুনা সংগ্রহ করেছে। এ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ধামইরহাট উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করে লাশটি দাফনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন (সিএস) সেলিম মিয়া জানান, জয়পুরহাট জেলায় এ পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ৩ হাজার ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে ৫৬ জনের পজিটিভ এসেছে। আর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলে পাঁচজনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।