করোনার কারণে সংকটে পড়া অসহায় পরিবারগুলোকে নগদ আড়াই হাজার টাকা করে দিচ্ছে সরকার। বাগেরহাটের শরণখোলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডে এই টাকা আত্মসাতের জন্য অভিনব পন্থা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রাকিব হাসান ১০০ ব্যক্তির তালিকার নামের ভেতরে ৪০ ব্যক্তির নামের সঙ্গে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তালিকা চেক করার সময় বিষয়টি তার নজরে আসে। পরে তিনি মেম্বার রাকিবের দেওয়া এই তালিকা আটকে দেন। পরবর্তীতে সংশোধন করে দরিদ্র মানুষের মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে মেম্বার রাকিব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য কর্মকর্তা তালিকা টাইপ করার সময় আমার নম্বরগুলো দিয়েছেন। কেন তিনি দিয়েছেন আমিও বুঝতে পারছি না।’
২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১০০ জনের নামের তালিকা দিয়েছিলেন রাকিব। তালিকা দেওয়ার পর সেগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই এলাকার প্রাইমারি শিক্ষকদের দিয়ে চেক করান, কোথাও একই মোবাইল নম্বর রয়েছে কিনা জানাতে বলেন। তখন মেম্বার রাকিবের নম্বর ৪০টি নামের সঙ্গে পাওয়া যায়। এরপর সেই তালিকা আটকে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সর্দার মোস্তফা শাহিন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিটি তালিকা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের দিয়ে চেক করিয়েছি। তারা তালিকার ভেতরে মেম্বারদের নম্বর পেলে সেগুলো বাদ দিয়েছেন। যখনই বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, তখনই মেম্বারদের মোবাইল নম্বর বাদ দিয়ে তালিকা ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। দুই একজন ধনী ব্যক্তির নামও এসেছিল, সেগুলোও বাদ দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সর্দার মোস্তফা শাহিন, ‘প্রথমে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল যাদের মোবাইল নম্বর নেই, তারা নিকটআত্মীয় বিশ্বস্ত বা মেম্বারের নম্বর দিতে পারবে। তবে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হয়েছে মেম্বারদের নম্বর দিতে পারবেন না। আমি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছিলাম যাতে সঠিক ব্যক্তিরা এই সহায়তা পায়, সেভাবেই করার চেষ্টা করেছেন তারা।’
শরণখোলা উপজেলা থেকে ১৩ হাজার ৬৫৩ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তারা সাহায্য পেতে শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।
করোনার কারণে সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে এককালীন আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য এক হাজার ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দের পর ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৩ মে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এই অর্থ পাওয়া শুরু করেছে। ১৮ মে’র মধ্যে নগদ বিতরণ সম্পন্ন হবে।