‘কলুর বলদ’ লেখায় বরখাস্ত শিক্ষক, লাইক দেয়ায় আরো ৩ জন

‘কলুর বলদ’ লেখায় বরখাস্ত শিক্ষক, লাইক দেয়ায় আরো ৩ জন

এক শিক্ষক সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নিজেদের 'কলুর বলদ' হিসেবে উল্লেখ করে। তার এ স্ট্যাটাসে লাইক দিয়েছেন আরো তিনজন শিক্ষক। আর এ অপরাধেই বরখাস্তের সাজা পেলেন রাজশাহীর চার শিক্ষক।

সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে রাজশাহীর বাগমারায় সরকারি বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষককে। সরকারের নির্দেশনা কটাক্ষ করে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেওয়ার অভিযোগে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সোমবার শিক্ষকদের হাতে বরখাস্তের চিঠি পৌঁছেছে।

চার শিক্ষক হলেন- উপজেলার বুজরুকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়নুল হক ও মোজাফফর হোসেন, কুলিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এবং বড়বিহানালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম ওরফে সুইট।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে এর আগে পরিপত্র জারি করা হয়। ওই পরিপত্র জারির পর জেলায় এটিই প্রথম ব্যবস্থা গ্রহণের ঘটনা।

৭ মে সরকারি কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সর্ম্পকিত নির্দেশনা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্র ওই দিনই প্রচার করা হয়। 

কেন বরখাস্ত করা হলো

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, করনোকালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ। শিক্ষকদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তুত করা সুবিধাভোগীদের তালিকা যাছাই-বাছাই করার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয় ওই নির্দেশনায়। সে মোতাবেক ১২ মে বাগমারার ইউএনও শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে তালিকাগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে দেন। তাঁদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাছাই-বাছাই করে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

দায়িত্ব পাওয়ার পরের দিন ১৩ মে শিক্ষক আয়নুল হক এই সিদ্ধান্ত কটাক্ষ নিজেদের ‘কলুর বলদ’ হিসেবে উল্লেখ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তার বক্তব্যে লাইক দেন আরো তিনজন শিক্ষক।

এরপরই বিষয়টি ইউএনও তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত করে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন পাঠান তিনি।

রবিবার রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম ওই চারজন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সোমবার এ সংক্রান্ত আদেশ উপজেলা শিক্ষা অফিসে পৌঁছায়। আজই চার শিক্ষকের কাছে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়।

এমআই/জিএস