দেশে কিট সংকট, বন্ধ আমদানিও: সামনে কী ঘটবে?

দেশে কিট সংকট, বন্ধ আমদানিও: সামনে কী ঘটবে?

দেশে কিট সংকটের অভাবে বিভিন্নস্থানে একের পর এক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে করোনা পরীক্ষার বুথ। বন্ধ রয়েছে কিট আমদানিও। ফলে করোনা শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার সাথে জড়িতদের অনেকে বিবিসিকে জানিয়েছেন, এখন নমুনা সংগ্রহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে এবং একেবারে প্রয়োজন ছাড়া পরীক্ষা করা হচ্ছে না। এই সংকট এমন সময়ে দেখা দিয়েছে যখন দেশে করোনা সংক্রমণের হার উচ্চমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থের অভাবে আটকে আছে করোনা টেস্টের কিট আমদানি। এমন প্রেক্ষাপটে দেশে করোনা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, অর্ধলক্ষ কিট সরবরাহ করলেও এখন পর্যন্ত একটি টাকাও পরিশোধ করেনি কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএইচডি)। তাই বন্ধ তাদের আমদানি। বিকল্প হিসেবে ছোট ছোট লটে কিট আমদানি করছে সিএমএইচডি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে গত তিন মাসে কিট এসেছে সাত লাখের বেশি। বর্তমান মজুদ প্রায় ত্রিশ হাজার, শনি-রবিবারে আসবে আরও একটি লট। মহাপরিচালক বলছেন চলতি মাসের শেষেই কাটবে জট। যদিও এ বিষয়ে চেষ্টা করেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোন বক্তব্য মেলেনি।

কিটের সরবারহ নেই তাই বন্ধ করোনা টেস্টের বুথ। কোথাও আবার নির্দিষ্ট সংখ্যার বাইরে চাইলেও টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশজুড়ে রোগী বাড়লেও সেই তালে বাড়ছে না টেস্টের সংখ্যা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি কিট আনা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ লাখ বিভিন্ন ভেন্ডরের মাধ্যমে ক্রয় করেছে কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার সিএসএইচডি। বাকি দুই লাখ এসেছে বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে।

কয়েক দফা একাধিক প্রতিষ্ঠান কিট সরবরাহ করলেও এখনো তাদের একটি টাকা বিলও পরিশোধ করেনি সিএমএইচডি। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, টাকা না পেয়ে তারা নতুন করে আর এলসি খুলছেন না, তাই তারা বন্ধ রেখেছেন কিট আমদানি।

ওএমসি লিমিটেডে পরিচালক মারুফ আহমেদ বলেন, এখন এমন একটা অবস্থা কোম্পানি বন্ধ করে দিয়ে ওদিক সাপ্লাই দিতে হবে। সিএমএইসিডিতো কাউকে কোন বিলই দিচ্ছে না। বলে যে প্রসেসিং-এ আছে, এই কথাতে মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী পরিষদের দোহাই দেয়া হয়। আমরা তো কোন ফান্ড পাচ্ছি না তাই অর্ডারও দিতে পারছি না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় ৯০০ কোটি টাকা বাজেট থাকলেও হাতে পেয়েছে মাত্র আড়াই'শ কোটি টাকা। বাজেটের অন্তর্বর্তীকালীন সময় হওয়ায় বাকি বরাদ্দ পেতে রয়েছে কিছু জটিলতা। চলতি মাসের শেষের দিকে সমস্যা মিটবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা, আবুল কালাম আজাদ।

তিনি বলেন, এখন হচ্ছে না কারণ সরকারের ক্রয় প্রক্রিয়া ৩০ জুনের পরে আমরা একটা স্টান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করবো। কীভাবে এটা হবে। তারপরে একসাথে অনেক দিনের জন্য কিনে এনে মজুদ করতে পারবো।

অর্থমন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।