মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে মেজর সিনহার পরিবার

মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে মেজর সিনহার পরিবার

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে’ পুলিশ গুলি করেছিল অভিযোগ করে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তার পরিবার।

তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে অস্ত্র বের করে গুলি করতে মাত্র ৪ সেকেন্ড সময় লাগত আদনানের। সেটা সে করেনি বরং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। আমরা হত্যা মামলা করব।’

কমান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত সাবেক এসএসএফ সদস্য সিনহা মো. রাশেদ খানের ডাক নাম আদনান। সাবেক সহকর্মী ও বন্ধুরা সিনহা নামে ডাকলেও পরিবারের সদস্যরা তাকে আদনানই ডাকতেন।

দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া সিনহা ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি উঠেছিলেন নীলিমা রিসোর্টে।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন।

ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।

তবে ঘটনার যে বিবরণ পুলিশ দিয়েছে, তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। রাশেদ আদৌ অস্ত্র তাক করেছিলেন কি না, তা নিয়ে যেমন সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তেমনি পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। যিনি সেদিন গুলি ছুড়েছিলেন, সেই পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ২০ পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সিনহার বড় বোন শরমিন মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ফোন করে আমার মায়ের সাথে কথা বলেছেন। খোঁজ নিয়েছেন, সান্ত্বনা দিয়েছেন, আশ্বস্থ করেছেন।’

চেকপোস্টের ঘটনা নিয়ে পুলিশের দাবি প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, ‘বিচার পেতে হলে মামলা করতে হবে, সেজন্য আমরা গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছি। সকলের সাথে পরামর্শ নিয়ে ২/৩দিনের মধ্যে একটি হত্যা মামলা করা হবে।’ তাদের বাড়ি যশোরের বীর হেমায়েত সড়কে হলেও বাবা মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ খানের সরকারি চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় তাদের থাকতে হয়েছে। সবশেষ অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব ছিলেন এরশাদ খান।