১২০০ কোটি টাকার চেকসহ গ্রেপ্তার ডিজে শাকিল ৫ দিনের রিমান্ডে

১২০০ কোটি টাকার চেকসহ গ্রেপ্তার ডিজে শাকিল ৫ দিনের রিমান্ডে

চাকরি এবং ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া ১২’শ কোটি টাকার চেকসহ গ্রেপ্তার প্রতারক ডিজে শাকিলসহ তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলায় পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তার আগে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে ডিজে শাকিল এবং তার দুই সহযোগী হুমায়ুন কবির ও হারুনুর রশিদ সাইফুলকে আদালতে নেওয়া হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইমরান মাহমুদ তুহিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক বিল্লাল হোসাইন তিন জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তাদেরকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে শাকিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা যুবলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া ডিবি পুলিশের পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন বলেন, ‘প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে বগুড়া সদর থানায় দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও প্রতারণার পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনজনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে দশ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হলে আদালত পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

তিনি বলেন, ‘ডিজে শাকিলকে গ্রেপ্তারের পর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য ভুক্তভোগী তাদের কাছে ফোন করতে শুরু করেছেন। যাদের অধিকাংশই শাকিলের প্রতারণার ফাঁদে পাঁচ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত খুঁইয়েছেন।’

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতারক শাকিলের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মচারী। শরিফুল ইসলাম নামের পিয়ন পদের এই কর্মচারীর বাড়ি সিরাজগঞ্জে। মূলত বিভিন্ন নিয়োগসংক্রান্ত তথ্য পাচার ও ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরিতে শরিফুল সহযোগিতা করেন শাকিলকে। সব জাল কাগজপত্রও তৈরি করা হয় তারই সহযোগিতায়। প্রতিটি জালিয়াতিতে প্রাপ্য টাকার অর্ধেক ভাগ নেন তিনি।

শাকিল রিমান্ডে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন, সরকারের কোন দপ্তরে কখন, কত জনবল নিয়োগ হবে তার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন শরিফুল। তাদের কাছে রয়েছে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা, নির্বাচন কমিশন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, সমবায় অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয়, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, সরকারি কর্ম কমিশন, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিমান বাংলাদেশ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নিয়োগের সব কাগজপত্র। বিভিন্ন ব্যাংকসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের স্থায়ী পদগুলোতে নিয়োগের তথ্যও তাদের সংগ্রহে রয়েছে। পদ বুঝে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার চুক্তি করেন তারা। এরপর সরকারি চিঠি, সই, সিল হুবহু নকল করে প্রার্থীদের সঙ্গে তারা শুরু করতেন ছলচাতুরি এবং আরও টাকা নেওয়ার পাঁয়তারা।