ব্যাংকার মারুফ সিদ্দিকীর দাফন সম্পন্ন

ব্যাংকার মারুফ সিদ্দিকীর দাফন সম্পন্ন

আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সেক্টরের তারকাখ্যাত ব্যাংকার মারুফ সিদ্দিকীর দাফন সোমবার দুপুরে সম্পন্ন হয়েছে। বাদ যোহর সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগা মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়।

জানাজায় ইমামতি করেন দরগাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা আসজাদ আহমদ। জানাজা শেষে দরগাহ গোরস্তানে তাঁর পিতা শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

গত ২ অক্টোবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় লন্ডনে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বিশিষ্ট ব্যাংকার মারুফ সিদ্দিকী তোফায়েল জার্মানীর একটি ব্যাংকে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন এবং দুই সপ্তাহ আগে অফিসের কাজে লন্ডন এসেছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। তিনি সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জের তুর্কবাগ গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ও মরহুমা সুরাইয়া চৌধূরীর কনিষ্ট সন্তান।

গত ২ অক্টোবর মারুফ সিদ্দিকী লন্ডনের সাউথ ক্যানজিংটনস্থ ক্রানলী হোটেলে অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে হোটেল কর্তৃপক্ষ জরুরী ৯৯৯ নাম্বারে কল করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স হোটেলে পৌঁছে এবং প্রাথমিক চেকআপ শেষে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মারুফ সিদ্দিকীর লাশ ওয়েস্টমিনস্টার করোনার্স মর্চুয়ারিতে রাখা হয়।

৬ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে ব্রিকলেন ফিউনারেল সার্ভিসের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ সিটি স্ক্যানের পোস্টমর্টেমের পরিবর্তে জন্য অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে নেয়া হয়। বিকালে লাশ ফিরিয়ে এনে ব্রিকলেন ফিউনারেল সার্ভিসের কোলড রুমে রাখা হয়। ব্রিকলেন ফিউনারেল ডাইরেক্টর শওকত সিদ্দিকী জানিয়েছেন, মরহুমের নামাজে জানাজা ৯ অক্টোবর শুক্রবার বাদ জুমা লণ্ডনে ব্রিকলেন জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজায় বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্ধ,মরহুমের আত্বীয় স্বজন প্রবাসের সর্বস্তরের মুসল্লিরা অংশ গ্রহন করেন। বিশিষ্ট ব্যাংকার মারুফ সিদ্দিকী তোফায়েল ইন্তেকালে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া। ১০ অক্টোবর বিমানের সরাসরি ফ্লাইটে তার লাশ সিলেট পৌঁছে।

নামাজে জানাজার সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের কন্ট্রোলার অধ্যাপক কবির আহমদ, কমডর মিনহাজুল আম্বিয়া চৌধুরী, মেজর (অব.) মইনুল ইসলাম, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মিফতাহুল হোসেন চৌধুরী, ডা. মাহফুজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রেজাউল হক, ক্যাডেট কলেজ এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সাইফুল ইসলাম রাজু, বৃক্ষপ্রেমী আফতাব চৌধুরী, এক্স ক্যাডেট এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুল আলম রুহেল, ওল্ড ক্যাডেট এসোসিয়েশন সিলেট এর সভাপতি অধ্যাপক শওকত হোসেন, সেক্রেটারী রাজু আহমেদ,

সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আহমেদ নূর ও ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনু, সাবেক সহ-সভাপতি হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী ও মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ খালেদ আহমদ ও মো. আফতাব উদ্দিন, শিক্ষক আতাউর রহমান মিলন, প্রেসক্লাবের পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক কবির আহমদ, সাংবাদিক তকুল রানা, এম এ মতিন, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, মো. মুহিবুর রহমান, ইউনুছ চৌধুরী, নৌসাদ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে লন্ডন থেকে মরদেহ এসে পৌঁছে। বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি মরহুমের বড় ভাই ইকবাল সিদ্দিকীসহ আত্মীয়-স্বজন।

মারুফ সিদ্দিকী'র বর্ণাঢ্য জীবন

মরহুম মারুফ সিদ্দিকী তোফায়েল জার্মানির ডয়চে ব্যাংকের সিনিয়র পোর্টফোলিও পরিচালক ও ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট প্রধান হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে দায়িত্ব পালন করতেন। সিলেট ক্যাডেট কলেজের মোধাবী ছাত্র মারুফ সিদ্দিকী কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর সার্টিফাইড পাবলিক একাউন্টেন্সি সম্পন্ন করেন।

তিনি গোলাপগঞ্জের তুর্কবাগ গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ও মরহুমা সুরাইয়া চৌধূরীর কনিষ্ট সন্তান। কর্মজীবনে মরহুম মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজের অধ্যাপক ছিলেন এবং সেখানেই মারুফ সিদ্দিকীর শৈশব কাটে।

বড় ভাই ইকবাল সিদ্দিকী সিলেট প্রেস ক্লাবের সভাপতি, দ্বিতীয় ভাই ইজলাল সিদ্দিকী লন্ডনে বসবাস করেন এবং বোন মাহমুদা আহসান সিদ্দিকা ফারেহা সিলেট ব্লুবার্ড হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা।

এদিকে সিলেটে বসবাসরত সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি মরহুমের বড় ভাই ইকবাল সিদ্দিকী তাঁর ছোট ভাইয়ের রুহের মাগফেরাতের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন। ১২ অক্টোবর সোমবার সিলেট হযরত শাহজালাল (রহঃ) দরগা মসজিদে নামাজে জানাজায় অংশ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।