ইরফান ও তার দেহরক্ষী তিনদিনের রিমান্ডে

ইরফান ও তার দেহরক্ষী তিনদিনের রিমান্ডে

রাজধানীর কলাবাগানে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম এবং তার দেহরক্ষী জাহিদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদারত।

বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আশফাক রাজীব হায়দার দুই আসামিকে গ্রেফতার দেখানো ও এ রিমান্ড আবেদন করেন।

বুধবার শুরুতে বিচারক গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু সাতদিনের রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানি করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা বা এতে কার কি ভূমিকা ও ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।

অপরদিকে আসামিপক্ষে কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চান। তারা বলেন, এ মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিই গ্রেফতার হয়েছেন। এখানে আর কোনো উদ্ধারের প্রশ্ন নেই বা কাউকে গ্রেফতারের বিষয় নেই। তাই আসামিদের রিমান্ডের কোনো প্রয়োজন নেই।

তারা বলেন, এজাহার অনুযায়ী বাদী নীলক্ষেতে বই কিনে নিজ মোটরসাইকেলে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। এখানে সরকারি কাজে বাঁধা কীভাবে হলো? মারামারির ঘটনায় চার্জশিট আমলে আমরা বিচারে সবকিছু বলব। আপাতত রিমান্ড বাতিল চাইছি।

শুনানি শেষে বিচারক তাদের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ২৬ অক্টোবর ভোরে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম (৩৭), তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদ (৩৫), হাজি সেলিমের মালিকানাধীন মদীনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), গাড়িচালক মিজানুর রহমান (৩০) ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিনজন।

গাড়িচালক মিজানকে রোববার রাতে গ্রেফতার করার পর সোমবার একদিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান।

মঙ্গলবার মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামি দিপুর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলব’। এরপর বের হয়ে তারা ওয়াসিমকে কিল-ঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।

তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

এমজে/