সিলেটে রায়হান হত্যা

আকবরকে পালাতে ‘সহায়তা করায়’ ৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

আকবরকে পালাতে ‘সহায়তা করায়’ ৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

সিলেটে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান নিহতের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কোতোয়ালি থানার আরও তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নতুন করে বরখাস্ত হওয়া তিন কর্মকর্তা হলেন- ঘটনার দিন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর (ওসি তদন্ত) সৌমেন মৈত্র ও রায়হান হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল বাতেন ভূঁইয়া এবং ঘটনার রাতে বন্দর ফাঁড়িতে দায়িত্বরত এএসআই কুতুব আলী।

আকবর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নতুন করে এই তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে বুধবার যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন এসএমপি কমিশনার নিশারুল আরিফ।

তিনি বলেন, ইন্সপেক্টর সৌমেনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করে ক্লোজ করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত বাতেন ও কুতুব আলীকে সিলেট পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে ঘটনার মূলহোতা আকবরসহ ৯ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।

জানা যায়, ১০ অক্টোবর গভীর রাতে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনের পরদিন সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। ১১ অক্টোবর গভীর রাতেই রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।

পাশাপাশি এসএমপির তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান শেষে প্রাথমিক সত্যতা পায়। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী- নির্যাতনে সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য বন্দর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন, কনস্টেবল তৌহিদ মিয়া, টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশীদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আর রায়হানকে ধরে ফাঁড়িতে আনার জন্য বন্দরবাজার ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয় এএসআই আশেক এলাহী, কুতুব আলী, কনস্টেবল সজীব হোসেনকে। কিন্তু ১২ অক্টোবরই তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আকবর ছাড়া বাকিদের নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হলেও আকবরকে খুঁজে পায়নি এসএমপি পুলিশ। এ নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হলে ১৯ অক্টোবর আকবর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশের কেউ দায়ী কিনা, তা অনুসন্ধানে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দফতর।

তদন্ত কমিটি গত ২৫ অক্টোবর পুলিশ প্রধানের কাছে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেয়। সেই প্রতিবেদনের সুপারিশ মোতাবেক ঘটনার দিন কোতোয়ালি থানার ওসির দায়িত্বে থাকা সৌমেন মৈত্রকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দফতর; পাশাপাশি তাকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।

এছাড়া মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল বাতেন ভূঁইয়া ও বন্দরবাজার ফাঁড়ির প্রত্যাহারকৃত এএসএই কুতুব আলীকে বরখাস্তের জন্য এসএমপি উপকমিশনার (উত্তর) বরাবর নির্দেশনা পাঠানো হয়।

সেই নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল তাদের বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএমপি কমিশনার নিশারুল আরিফ।

এদিকে পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দায়িত্বে অবহেলায় আরও ৫ জন কর্মকর্তাকে শাস্তির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নথি পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।