এভাবে চললে দূষণ কোনো দিন দূর হবে না: ওয়াসাকে হাইকোর্ট

এভাবে চললে দূষণ কোনো দিন দূর হবে না: ওয়াসাকে হাইকোর্ট

বুড়িগঙ্গা নদীর পানিদূষণ রোধে আদালতের আগের রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ওয়াসার এমডির (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) পদক্ষেপ খুব ধীরগতির বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আগের রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতিবিষয়ক শুনানিতে বুধবার আদালত বলেন, এভাবে চলতে থাকলে বুড়িগঙ্গার দূষণ কোনো দিন বন্ধ হবে না। রায় নির্দেশনা অকার্যকর হয়ে যাবে।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে রায় বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নিজ হলফনামা আকারে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানকে ২১ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওয়াসার এমডির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী উম্মে সালমা।

শুনানিতে ১১ জানুয়ারি দাখিল করা প্রতিবেদন তুলে ধরেন উম্মে সালমা।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘রায়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও বুড়িগঙ্গার পানিদূষণের জন্য দায়ী শিল্পকারখানা ও গৃহস্থালির বর্জ্য নদীতে নিঃসরণ বন্ধে ওয়াসার এমডি চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। হলফনামা আকারে যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে, তার সঙ্গে রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের সম্পৃক্ততা নেই। রায় বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকলে বুড়িগঙ্গার নদীর দূষণ রোধ করা যাবে না।’

বুড়িগঙ্গা নদীর পানিদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১০ সালে একটি রিট করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১ জুন তিন দফা নির্দেশনাসহ রায় দেওয়া হয়। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গায় বর্জ্য ফেলা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং বুড়িগঙ্গা নদীতে সংযুক্ত সব পয়ঃপ্রণালির লাইন (সুয়ারেজ) ও শিল্পকারখানার বর্জ্য নিঃসরণের লাইন ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে ওই নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশনা বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে বিবাদীদের আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।

এর আগে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর শুনানিতে আদালত বলেছিলেন, ইতিপূর্বে তিনি (ওয়াসার এমডি) আদালতে উপস্থিত হয়ে প্রতিশ্রুতি দেন, রায় বাস্তবায়ন করবেন। অথচ প্রতিশ্রুতি অনুসারে রায়ের বাস্তবায়ন হয়নি। বারবার এফিডেভিট নিয়ে কালক্ষেপণ করেছেন।