কাল বা পরশু টিকা আসবে, আগে পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

কাল বা পরশু টিকা আসবে, আগে পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের টিকার চালান হাতে পাওয়ার পর প্রতিদিন দুই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে থাকা কর্মীরাই আগে টিকা পাবেন, ভিভিআইপিদের জন্য এখানে কোনো অগ্রাধিকার নেই।

ভারত থেকে আসা টিকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে উপহারের টিকা দেশে পৌঁছালে তিনি নিজে বিমানবন্দরে গিয়ে তা গ্রহণ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমার আশা করছি, আমাদের যে শিডিউল আছে, সে অনুযায়ী আসবে। আগামীকালের একটা শিডিউল আছে, অথবা পরশুদিন আসবে। এটাই সর্বশেষ খবর। ভারত এই টিকা আমাদের কাছে পৌঁছে দেবে। আমি বিমানবন্দরে গিয়ে টিকা গ্রহণ করব।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের কিছু টিকা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এক সপ্তাহ পর সব জেলায় শুরু করা হবে। এটাই আমাদের পরিকল্পনা। সারা দেশে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগবে। সব জায়গায় পৌঁছালে আমরা সারা দেশে একযোগে কাজ শুরু করব। শুরু হবে ঢাকা থেকে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জেলা পর্যায়ে চারটি, উপজেলায় দুটি এবং মেডিকেল কলেজে ছয়টি দল টিকা দেওয়ার কাজ করবে। কয়েকটি দল কাজ করবে বিভিন্ন হাসপাতাল ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সিরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকার প্রথম চালান দেশে আসবে এ মাসের ২৫ বা ২৬ তারিখে। তার আগেই ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই টিকা পাওয়ার পর পরই, অধিক সংক্রমিত এলাকা হওয়ায় ঢাকায় সীমিত আকারে দেওয়ার মাধ্যমে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, প্রায় ২৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এই কাজে যুক্ত থাকবেন। প্রাথমিকভাবে আমরা ইউনিয়নগুলো বাদ দেব। শুধু জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকা হিসাব করে প্রতিদিন আনুমানিক দুই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শুরুতেই টিকা নিচ্ছেন- বাংলাদেশে এমন কিছু হবে কি না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপাতত সে ধরনের চিন্তা নেই।’ তিনি বলেন, যাদের সবচেয়ে আগে প্রয়োজন, ফ্রন্টলাইনার; তাদের আগে দেব। ডাক্তার, নার্স, পুলিশ প্রথমে আমরা সাংবাদিকদেরও দেব। যেটা প্ল্যান করা আছে, সেভাবেই হবে। ভিভিআইপি আমাদের জন্য পুরো দেশের মানুষই ভিভিআইপি, আমরা সেভাবেই দেখি। যাদের প্রয়োজন আগে তাদের আগে দেওয়া হবে।’

বাংলাদেশ সরকারিভাবে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তিন কোটি ডোজ কিনছে, যার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করছে সরকার। তার আগেই বৃহস্পতিবার দেশে পৌঁছাবে ২০ লাখ ডোজ টিকা, যা ভারত সরকার উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে পাঠাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভারত থেকে টিকা আসার পর তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিএমএসডি, ইপিআই এবং তেজগাঁও হেলথ কমপ্লেক্সের কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ করা হবে।