লঞ্চশ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

লঞ্চশ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের মামলায় গতকাল সোমবার দুই লঞ্চের দুই মাস্টার রুহুল আমিন ও আলমাস ওরফে জামালের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন মেরিন আদালত। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বেলা দুইটার দিকে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে তা পালন শুরু করেন নৌযান শ্রমিকেরা। পরে সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন শ্রমিকেরা।

নৌযান শ্রমিকনেতারা বলছেন, গত বছর শীত মৌসুমে মেঘনায় ঘন কুয়াশায় ঢাকা-বরিশাল নৌপথে চলাচলকারী একই কোম্পানির অ্যাডভেঞ্চার-১ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামের দুটি লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও লঞ্চ দুটির মাস্টারসহ চারজনের সনদ চার মাসের জন্য জব্দ করা হয়। গতকাল ওই মামলায় ঢাকায় মেরিন আদালতে হাজিরা দিতে গেলে রুহুল আমিন ও জামাল হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠান বিচারক। এর প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম রাতে বলেন, যে দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত, সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর তাঁদের জামিনের আশ্বাস পেয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।

এর আগে গতকাল দুপুর থেকে ঢাকা নদীবন্দরসহ সারা দেশে যাত্রীবাহী নৌযান শ্রমিকেরা তাঁদের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় ঢাকা নদীবন্দরসহ সারা দেশের নদীবন্দর টার্মিনালের পল্টুনগুলো থেকে লঞ্চগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। এদিকে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় গতকাল দুপুরের পর থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে আসা যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যের লঞ্চ না পেয়ে হাজার হাজার নারী–পুরুষ তাঁদের পরিবার–পরিজন নিয়ে টার্মিনালের পল্টুনে অপেক্ষা করে।

ঢাকা নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ারচর এলাকায় এমভি অ্যাডভেঞ্চার-১–এর সঙ্গে এমভি অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মেরিন আদালতে একটি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি (সোমবার) মামলার মেরিন আদালতের বিচারক ওই লঞ্চের দুই মাস্টারকে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে নৌযান শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন।

পাতারহাটগামী যাত্রী জহুরা বেগম জানান, তিনি বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কল্যাণপুর থেকে সদরঘাট টার্মিনালে গিয়ে শোনেন, লঞ্চ ছাড়বে না।