বিমান দুর্ঘটনায় আহত কবিরকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে

বিমান দুর্ঘটনায় আহত কবিরকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে

ঢাকা, ২৪ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : নেপালের কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় সংকটাপূর্ণ কবির হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে।

শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সভাকক্ষে চিকিৎসকদের একটি দল এবং কবির হোসেনের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একটি সভা হয়। সভা শেষে দুপুর ১২টায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়।

ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্তলাল সেন জানান, আহত কবির হোসেনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সম্মতিক্রমেই তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হচ্ছে।

গত ১২ মাচ নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় বেসরকারি এয়ারলাইনস ইউএস-বাংলার একটি বিমান। ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হয়েছেন। বিমানটিতে ৭১ আরোহী ছিলেন।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামের কবির কসমেটিক ব্যবসার সূত্রে নেপালে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে নেপালের একটি হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কবীর দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার উত্তরার কোটবাড়ি মাস্টারপাড়া এলাকায় সপরিবারে বসবাস করেন।

সামন্তলাল সেন বলেন, ‘কবির হোসেনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা মিলে সভায় বসেছিলাম। কবিরের ছেলে আল হেলাল ইবনে কবির ছিলেন আমাদের সঙ্গে। আল হেলাল আমাদের জানিয়েছেন, তাঁর বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেবেন। যেহেতু কবিরের পরিবার তাঁকে সিঙ্গাপুর নেবে, সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু আমরা এটা বলতে পারি যে, আমাদের এখানে তাঁর বেটার চিকিৎসাটা হচ্ছে।’

কবিরের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সামন্তলাল সেন বলেন, ‘আমাদের সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। কবিরের দুই পায়ে ফাটল আছে। এর মধ্যে ডান পায়ের অবস্থা খারাপ। সেখানে ইনফেকশন হয়ে গেছে। আমরা ডান পা কেটে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কবিরের শুধু পায়ের ফ্রাকচার সেটা বলা যাবে না। তাঁর ডান ফুসফুসে সমস্যা আছে। আঘাতের কারণে তাঁর ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে গেছে। রক্তের বিলুরোবিন কমে গেছে। নিউমোনিয়ার সমস্যা রয়েছে। সব মিলিয়ে তাঁর অবস্থা খারাপ।’

কবির হোসেনের ছেলে আল হেলাল ইবনে কবির বলেন, ‘আমার বাবাকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে তাঁর বেটার চিকিৎসা হলেও আমরা তাঁকে এখানে রাখব না। ইউএস-বাংলার এমডির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরাও সম্মতি দিয়েছেন।’

কবির হোসেনকে আগামীকাল বা পরশু নেওয়া হতে পারে বলেও জানান আল হেলাল। তবে এখানে চিকিৎসকরা চিকিৎসার কোনো ত্রুটি করেননি বলেও জানান তিনি।

চিকিৎসকরা আরো জানান, আহত শাহীন বেপারীকেও আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা কবির হোসেনের চাইতে ভালো।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৪৫০ঘ.)