মামার লালসায় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, বিয়ে, অতঃপর..

মামার লালসায় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, বিয়ে, অতঃপর..

দরিদ্র পরিবারের কিশোরীর পার্শ্ববর্তী দুঃসম্পর্কের মামা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার ১৫ বছরের এক কিশোরী। অবশেষে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষকের সঙ্গে কিশোরীকে বিয়ে দেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিয়ের ১৭ দিনের মাথায় গত ১লা এপ্রিল সকালে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে শশীভূষণ থানা পুলিশ। ভোলার চরফ্যাসনের শশিভূষণ থানাধীন হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, ৪নং ওয়ার্ডের হারুনের মেয়ে ঝুমুর (জিকু) কে ৬/৭ মাস আগে ঘরে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন একই এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে কিশোরীর দূঃসম্পর্কের মামা জুয়েল। ধর্ষক জুয়েলের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। ১০ই মার্চ ওই কিশোরী তার মাকে সব কথা খুলে বলেন। এই ঘটনার বিচারের আশায় কিশোরীর মা রাজনৈতিক বিভিন্ন নেতা, ধর্ষকের পরিবার ও সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেন করেন।

এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে ১২ই মার্চ সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু ততক্ষণে ধর্ষক জুয়েল পালিয়ে যান এলাকা থেকে। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রশাসনের নজরে আসেনি ঘটনাটি।

শেষমেষ ঘটনা ধামাচাপা দিতে শশীভূষণ থানা ছাত্রলীগের আহবায়ক ও ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নান্নু মাতাব্বরের ছেলে লোকমান মাতাব্বর আইনি সহায়তা দেয়ার কথা বলে ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করে ধর্ষক এক সন্তানের জনক জুয়েলের সাথে বিয়ে দেন কিশোরীকে। বিয়ের ১৭ দিন পার হলেও জুয়েলের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা না পেয়ে রাগে অভিমানে কিশোরীর নিজ ঘরের বারান্দায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর মায়ের দাবি- আত্মহত্যার ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও জুয়েলের সাথে ফোনে কথা বলছিলেন কিশোরী। সঠিক বিচার নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। ভুয়া কাগজ তৈরি করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে পরিপূর্ণ বয়স দেখিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা অভিমত প্রকাশ করেন।

শশীভূষণ থানা ছাত্রলীগের আহবায়ক লোকমান মাতাব্বর জানান, উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে দোষের কি।

এই ঘটনায় বক্তব্য নিতে ধর্ষকের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাড়ির লোকজন জানায়, ঘটনার পরপরই তারা গাঢাকা দিয়েছে।

শশীভূষণ থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। এ ঘটনার শশীভূষণ থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন লাশটি উদ্ধার করে আনা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমজে/