সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি: সভাপতির নাম ঘোষণা নিয়ে দুই পক্ষে বিরোধ

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি: সভাপতির নাম ঘোষণা নিয়ে দুই পক্ষে বিরোধ

সভাপতির নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির দুই অংশ। আজ বুধবার দুপুরে সমিতির মিলনায়তনে প্রথমে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেন।

সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতির শূন্য পদ নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। কিন্তু সমিতির সহসভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্যা মঙ্গলবার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা সমিতির গঠনতন্ত্রবিরোধী।

এই সংবাদ সম্মেলনের পরই সমিতির সভাপতির কক্ষে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে নেতৃত্ব দেন সমিতির সহসভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্যা। পরে তাঁর লিখিত বক্তব্য গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিশেষ সাধারণ সভায় (মঙ্গলবার) সভাপতি হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিনের নাম প্রস্তাব করা হয়। এই পদে অন্য কোনো আইনজীবীর নাম কেউ প্রস্তাব না করায় উপস্থিত আইনজীবীরা হাত তুলে ও কণ্ঠভোটে তা সমর্থন করেন। ফলে গঠনতন্ত্রের ১৫(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এ এম আমিন উদ্দিন সর্বসম্মতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৪ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মতিন খসরু মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে সভাপতির পদটি শূন্য হয়। সভাপতির শূন্য পদ পূরণে করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার সমিতির বিশেষ সাধারণ সভায় দুই পক্ষের মধ্যে হইচই ও বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। সেদিন সমিতির সহসভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্যা জানান, সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ এম আমিন উদ্দিনকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করেছেন। তবে ওই দিনই পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস জানান, কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিশেষ সাধারণ সভা মুলতবি হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন সমিতির গত দুই মেয়াদে সমিতির সভাপতি ছিলেন। তিনি এখন অ্যাটর্নি জেনারেল।

এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে মুহাম্মদ শফিক উল্যা বলেন, সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিশেষ সাধারণ সভায় সভাপতির শূন্য পদ পূরণের জন্য সর্বসম্মত পদ্ধতির আলোকে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো অ্যাজেন্ডা আলোচনার সুযোগ নেই। ওই সভা মুলতবি করারও সুযোগ নেই। অথচ সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তিনি একপর্যায়ে বিশেষ সাধারণ সভা মুলতবি করতে বাধ্য হন।

অন্যদিকে সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস বলেন, আইনজীবীদের মধ্যে মতবিরোধ হওয়ায় (বিশেষ সভায়) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সভার কাজ করা সম্ভব হয়নি। কোনো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত ছাড়াই সম্পাদক সভার কাজ মুলতবি করেন। তিনি বলেন, কার্যকরী কমিটির সহসভাপতি অতি উৎসাহী হয়ে সমিতির সভাপতির কক্ষে নিজেই সমিতির সদ্য সাবেক সভাপতিকে ২০২১-২২ সালের বাকি মেয়াদের জন্য সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। কোনো ধরনের আলোচনা কিংবা সেখানে সভাপতি পদে কোনো নির্বাচন হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।

গত মার্চে অনুষ্ঠিত সমিতির নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ আটটি পদে জয় পান আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা। আর সম্পাদকসহ বাকি ছয়টি পদ পেয়েছে বিএনপি-সমর্থিত নীল প্যানেল।