সন্তানদের ঈদ পোশাক উদ্ধারে ফেরি থেকে বাবার ঝাঁপ

সন্তানদের ঈদ পোশাক উদ্ধারে ফেরি থেকে বাবার ঝাঁপ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার দূরপাল্লার বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিলেও ঈদের আনন্দ আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে বিভিন্ন কৌশলে শহর ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন মানুষ। এতে বাসস্ট্যান্ড ও ফেরিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। সন্তানদের সঙ্গে ঈদ করতে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে পদ্মাপারের জন্য আসেন আতাউর মিয়া। এসে দেখেন গাদাগাদি করে মানুষ ফেরিতে ওঠার প্রতিযোগিতা শুরু করেছেন। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আতাউর মিয়া ফেরিতে উঠতে পারলেও সন্তানদের জন্য কেনা ঈদের পোশাকের ব্যাগটি হাত থেকে পানিতে পড়ে যায়। ব্যাগ থাকা সন্তানদের পোশাক উদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরি থেকে পানিতে ঝাপ দেন আতাউর মিয়া।

বুধবার (১১ মে) লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া এ ঘটনা ঘটে।

আতাউর মিয়ার হাতে দুটি ব্যাগ ছিল, একটি ব্যাগে সন্তানদের ঈদ পোশাক, অন্যটিতে নিজের ব্যবহৃত ব্যাগ। ফেরিতে ঠেলাঠেলি অবস্থায় একটি ব্যাগ কিনারে রেখে অন্য ব্যাগটি রাখার চেষ্টা করতেই একটি ব্যাগ পানিতে পড়ে যায়। ব্যাগ উদ্ধারে তীর থেকে প্রায় ১০০ গজ সামনে পানিতে ভাসমান ব্যাগটির জন্য তাৎক্ষণিক ফেরি থেকে পানিতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু দুইটি ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে সাঁতরে তীরে উঠতে পারছিলেন না। স্থানীয় একজন জেলে নৌকা চালিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। তীব্র রোদে ৪ ঘণ্টা অপেক্ষমান ক্লান্ত আতাউর তীরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আতাউর মিয়া বলেন, ফেরিতে ঠেলাঠেলি করে উঠতে পারলেও ব্যাগ পানিতে পড়ে যাওয়ায় ঝাঁপ দিয়েছি। কারণ পানিতে পড়ে যাওয়া ব্যাগের মধ্যে দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্য ঈদের নতুন জামা ছিল। সারা দিন রোজা রেখে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে যেতে পারছিলাম না। এতো কষ্ট করে ফেরিতে উঠে ব্যর্থ হলাম তাই কান্না চলে আসছিল।

আতাউর মিয়া দুইটি ভারি ব্যাগ নিয়ে ডুবে যাচ্ছিলেন দূর থেকে দেখে তাৎক্ষণিক ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন নৌকার চালক মাঝহারুল ইসলাম।