সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে দোকানপাট

সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে দোকানপাট

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার। তবে এ বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপনে দোকানপাট ও বিপণিবিতান সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। সে কারণে গতকাল রোববার দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে আপাতত লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখা হবে বলে জানান সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন।

তবে এ সিদ্ধান্ত গতকাল রাতে পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গতকাল রোববার এক প্রজ্ঞাপনে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বৃদ্ধি করে। আজ সোমবার থেকে তা থাকবে ২৩ মে মধ্যরাত পর্যন্ত। এ সময়ে চলমান বিধিনিষেধের শর্তগুলো বহাল থাকবে। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদও আরেক দফা বাড়ানো হয়। ঈদের ছুটির পর গতকালই রাজধানীর কিছু কিছু দোকানপাট খুলেছে। গতকালের প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে কিছু বলা না থাকায় দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা থাকবে কি না, সেটি নিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন আজ সোমবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি এনটিভি অনলাইনকে গতকাল বিকেলে বলেছিলাম সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২৩ মে লকডাউন পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ রাখব। কিন্তু পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল রাতে আমার মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। তিনি (প্রতিমন্ত্রী) জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও মার্কেট খোলা যাবে। এ কারণে আমাদের সিদ্ধান্তও পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট ও বিপণিবিতান স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা হবে।’

হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, অধিকাংশ বিপণিবিতানে ঈদের ছুটি চলছে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে সেগুলো খুলবে। তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

রাজধানীর নিউমার্কেট আগামী বুধবার থেকে খুলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের নিউমার্কেট এলাকার সাপ্তাহিক ছুটি মঙ্গলবার। তার পরদিন, অর্থাৎ বুধবার থেকে মার্কেট খোলার বিষয়ে আমাদের আগে থেকেই নোটিশ দেওয়া আছে।

গতকাল শনিবার বিধিনিষেধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২৩ মে পর্যন্ত শহরে তথা জেলার ভেতরে গণপরিবহণ চলাচল করতে পারবে। আগের নির্দেশনা মতে, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। তাছাড়া নৌ, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

সরকারের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব দপ্তর, সংস্থা জরুরি পরিষেবার আওতামুক্ত থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল ও রেস্তোরাঁ কেবল খাবার বিক্রি বা সরবরাহ করতে পারবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউন ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলমান বিধিনিষেধ শেষ হচ্ছে ১৬ মে। এ ছাড়া ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ সংশোধন করে জনগণের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে। এ আইনের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এখন এ আইন সংশোধন করে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আর মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি রুখতে সারা দেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সাতদিনের বিধিনিষেধ। লকডাউন শেষে দুদিন বিরতির পর গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। সেই মেয়াদ শেষ হয় গত ২১ এপ্রিল মধ্যরাতে।

তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বিধিনিষেধের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে লকডাউন বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত। এরপর গত ৩ মে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আবারও লকডাউন বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।