নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতিসঙ্ঘের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৬টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি (জেএফকে) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. সহিদুল ইসলাম এবং জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী সফরকালীন আবাসস্থল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে যান।

এর আগে, নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর-দফতরে আয়োজিত সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি ভানতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেখানে যাত্রাবিরতি শেষে রোববার বিকেলে নিউইয়র্কের উদ্দেশে হেলসিঙ্কি ত্যাগ করেন।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের দেড় বছর পরে প্রধানমন্ত্রী জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং সেখানে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ১৯ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন।

নিউইয়র্কে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘের সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

১৯৭৪ সালে জাতিসঙ্ঘে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বাংলায় তার ভাষণ দেবেন।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের একটি ছোট দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।

পরে, তিনি একটি গাছ লাগাবেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার সম্মানে জাতিসঙ্ঘ সদর-দফতরের উত্তর লনে ইউএন গার্ডেনে একটি বেঞ্চ উৎসর্গ করবেন।

বিকেলে, প্রধানমন্ত্রী ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা জাতিসঙ্ঘ সদর-দফতরে সাধারণ বিতর্কের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আয়োজিত ‘বিজনেস গোলটেবিল: ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’-অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।

২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন গ্রহণের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন।

এছাড়া, তিনি ‘হোয়াইট হাউস বৈশ্বিক কোভিড-১৯ শীর্ষ সম্মেলন: মহামারির সমাপ্তি এবং আরো ভালো অবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন এবং বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সেদিন বিকেলে শেখ হাসিনা ‘রোহিঙ্গা সংকট: একটি টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সেখানে পূর্বে-রেকর্ড করা বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

২৩ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সুইডিশ মিশন আয়োজিত ‘জাতিসঙ্ঘে সাধারণ কর্মসূচি: সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক নেতাদের নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

তিনি জাতিসঙ্ঘ সদর-দফতরে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব কর্তৃক আহ্বান করা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দশক কর্মসূচির অংশ হিসেবে খাদ্য-ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইড-লাইনে শেখ হাসিনা বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলি কিউসি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, নেদারল্যান্ডের রানী ম্যাক্সিমা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ এবং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এনগুয়েন জুয়ান ফাইক।

এছাড়া, তিনি জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।

জাতিসঙ্ঘ অধিবেশন এবং নিউইয়র্কে অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর ২৫-৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে শেখ হাসিনা ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং হেলসিঙ্কিতে যাত্রা বিরতির পর ১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।

এমজে/