প্রাথমিক-ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছে না

প্রাথমিক-ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা হচ্ছে না

কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। মূল্যায়নের মাধ্যমে ফলাফল দেওয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এমন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদিত সারাংশ রবিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মহাপরিচালক বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবের সারাংশ পাঠানো হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী ওই সারাংশে অনুমোদন দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, প্রস্তাবে বলা হয়েছিল—মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ফলাফল দেওয়া হবে। একইভাবে প্রাথমিকের অন্যান্য শ্রেণির ক্ষেত্রেও মূল্যায়নের মাধ্যমে ফলাফল দেওয়া হবে।’

বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবে মূল্যায়ন শব্দটি রেখেছি। করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে বিকল্প মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফলাফল দেবে। আর করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ও ঝুঁকি তৈরির কোনও সম্ভাবনা না থাকলে, বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। নিজ নিজ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল দেওয়া হবে এবং শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এবার ইবতেদায়ি সমাপনীও হবে না। তারা আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।’

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকের সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে হবে না। বার্ষিক মূল্যায়নের মতো শ্রেণি মূল্যায়ন করা হবে। আর শ্রেণি মূল্যায়নের ফল অনুযায়ী, বোর্ডের সনদ পাবেন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীরা। আর বিদ্যালয় থেকে সনদ পাবে পিইসি পরীক্ষার্থীরা।

শিক্ষামন্ত্রী ওইদিন আরও বলেছিলেন, আমরা যেটি করতে চাইছি—সব শ্রেণির শ্রেণি সমাপনী মূল্যায়ন, যেটি চলছে। চলমান অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন চলছে। অষ্টম শ্রেণিরও সমাপনী মূল্যায়ন হবে। সেখানে সামষ্টিক পরীক্ষা হবে—কিছুটা অ্যাসাইনমেন্ট যেটা হচ্ছে, সেটা দিয়ে হবে। আমরা আশা করছি, সনদ এটি দিয়ে দিতে পারবো। তাদের সনদ তো একটা দিতে হবে। অষ্টম শ্রেণির পর অনেকের হয়তো পড়াশোনার সুযোগ হয় না। সেটা আমরা বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো। শিক্ষার্থীরা আগের মতো বোর্ডের সনদ পাবে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নিজ নিজ বিদ্যালয়ে প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে। করোনার এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের বিস্তার রোধে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষার্থীরা আগের মতোই সনদ পাবে।’

পিইসি, জেএসসি ও জেডিসি সেরকমভাবে হবে না। তবে ক্লাস সমাপনী মূল্যায়ন—অন্যান্য শ্রেণির মতো হচ্ছে এবং হবে।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর কেন্দ্রীয়ভাবে পিইসি, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষা পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত। কারণ, এই পরীক্ষার সনদ দেওয়া হতো বোর্ড থেকে।

করোনার কারণে ২০২০ সালের পিইসি, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ (ক্লাস প্রশোমন) করা হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা না নেওয়া হলেও বার্ষিক মূল্যায়ন করা হবে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের মূল্যায়নের ভিত্তিতে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীরা বোর্ড সনদ পাবে। তবে পিইসি পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের সনদ পাবে।’