নিষেধাজ্ঞার পর ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ

নিষেধাজ্ঞার পর ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ

নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন পর লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে মাছ ধরা পুরোদমে শুরু হয়েছে। মাছঘাটগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও আড়ৎতদাররা। প্রতিটি ঘাটে ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনা ও সরগরম হয়ে উঠেছে মাছঘাট। তবে প্রতিটি মা মাছে ডিম রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর জাল ফেলা ও মাছ শিকারে নদীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। তবে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকতা মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে তারা অনেক খুশি।

গত বছর শীতে প্রচুর মাছ পাওয়া গেছে। এবারও সে অনুযায়ী মাছ আরো বেশি ধরা পড়বে বলে আশা করেন তিনি। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার মে.টন।

মজুচৌধুরীরহাটের জেলে কালাম মাঝি, ইউনুছ মাঝি, সোহেলসহ অনেকেই এ প্রতিবেদককে জানান, ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ ছিল। সরকারের সে নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে নামেন নি। ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর নদীতে মাছ শিকারে নামছেন। আগের তুলনায় জালেও ধরা পড়ছে ইলিশ। দামও অনেক ভালো। এতে তারা অনেক খুশি। জেলেদের দাবি, যথাসময় অভিযান না দেয়ায় মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। এ কারণে মাছে ডিম রয়েছে। এদিকে এক কেজি ওজনের একহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে চার হাজার টাকা। আর এক কেজি ওজনের নিচে একি হালি মাছ বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।

প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল এলাকার ১শ’ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীর ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষিত এলাকায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্য রাত পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এসময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত করন ও মজুদকরণ বন্ধ ছিল। এই জেলায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। সবাই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এর মধ্যে প্রায় ৪২ হাজার জেলে রয়েছে নিবন্ধিত। বাকি জেলেরা নিবন্ধিত না হওয়ায় সরকারের খাদ্য সহায়তার বাইরে রয়েছে। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলেরা।

নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে লক্ষ্মীপুরে তিনশ’ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৫ লাখ মে.টন জাল ও পঞ্চাশটি মামলায় দায়ের করা হয়েছে। ২৫টি জন জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি লক্ষাধিক টাকা অর্থদন্ড করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য বিভাগ।

এদিকে জেলা মৎস্য অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম জানান,. প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের যৌথ অভিযানে এবারের অভিযান সফল হয়েছে। মধ্য রাত থেকে নদীতে নামছে জেলেরা। তাদের জালে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ, ধরা পড়ছে। এতে তারা অনেক খুশি। গত বছর শীতে প্রচুর মাছ পাওয়া গেছে। এবারও সে অনুযায়ী মাছ আরো বেশি ধরা পড়বে বলে আশা করেন তিনি। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিধারন করা হয়েছে ২৫ হাজার মে.টন। গত বছর ইলিশ উৎপাদন হয় ২০ হাজার ৮শ টন।

এমজে/