সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করা উচিত হবে না: ড. কামাল হোসেন

সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করা উচিত হবে না: ড. কামাল হোসেন

ঢাকা, ২১ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করা উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি চাই সকলেই যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। যারা চায় না সকলের অংশগ্রহণ হোক তারাই সেরকম পরিস্থিতি তৈরি করে। এটা এভাবে বেশি বলা উচিত না। আমার আপনার লক্ষ্য একই। সেটা হলো সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যদি এটাকে ঠেলে অন্যদিকে নেয়ার অপচেষ্টা হয় সেটা আমরা কখনোই চাইবো না।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচন পরিচালনা করে তারা যদি নিরপেক্ষ না হয় তাহলে জনগণ কীভাবে ভরসা করবে? বর্তমানে যেরকম রাজনৈতিক পরিস্থিতি তা চলতে থাকলে গত নির্বাচনের মতো একটি নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আবারো তৈরি হবে। বিগত নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়নি।

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনকালে আইনকে সঠিকভাবে প্রয়োগের জন্য যদি সেনাবাহিনীকে প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই করা দরকার। সেরকম অবস্থায় যেতেও পারে, নাও যেতে পারে। সেই অবস্থায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সেইটা মূল্যায়ন করতে হবে। আপনারা দেখেছেন ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে অনেকগুলো বক্তৃতা রয়েছে। সেগুলো একসঙ্গে করে দিলে আমি একটি ম্যানুফেস্ট ছাপিয়ে বিলি করে দিতাম। তার বক্তব্যতে স্পষ্ট কীভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায়।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে সংবিধান সমুন্নত রাখা, নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশন, দুই মেয়াদের বেশি এক ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী না হওয়াসহ সাত দফা দাবিতে জাতীয় ঐক্য গঠনের আহ্বান জানায় গণফোরাম।

সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা বলেন, সাত দফার ভিত্তিতে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হতে পারে। আগামীতে বৃহত্তর ঐক্যের জন্য এ দাবিগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে।

দলটির দাবির মধ্যে আাছে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে সংবিধানকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করা, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও নিয়োগের ক্ষমতা, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া ছাড়াও কমিশন নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখা, এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে না থাকা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত সব রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বর্তমান সংবিধানের সময়োপযোগী সংশোধনের জন্য কমিশন গঠন এবং কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন।
গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা আলতাফ হোসেন, জগলুল হায়দার, নৃপেন ঘোষ ও মোস্তাক আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১০৯ঘ.)