জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি

‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে

‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে

বৈশ্বিক মহামারি, বন্যা ও ডলার সংকটে দেশের অর্থনীতি ভালো নেই। সবকিছুর দাম বাড়তি। ঋণের চাপে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। ফলে মুদ্রাস্ফীতিতে দেশের প্রতিটি জনগণ দিশেহারা। কিন্তু এসবের মধ্যেই হঠাৎ করেই ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো অতি উচ্চহারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনায় নিয়ে জ্বালানি তেলের ওপর বিদ্যমান ৩৭ শতাংশ কর মওকুফের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে গরিব ও মধ্যবিত্ত জনতা নামের একটি সংগঠন।

বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে ওই মানববন্ধন করে সংগঠনটি।

এতে বক্তারা বলেন, ডিজেলের দাম ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকা করা হয়েছে। জ্বালানি তেলের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যাপক হারে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া। আর যেহেতু পরিবহনের সঙ্গে দৈনন্দিন সব মৌলিক খাত জড়িত, তাই জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সব ব্যয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের ৯৯ শতাংশ জনগণের পক্ষে সামাল দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না।

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক মুহম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, অচিরেই শুল্ক ও ভ্যাট মওকুফ করে জ্বালানি তেলের মূল্য ডিজেল প্রতিলিটার ৮৩ টাকা, পেট্রোল ৯৪ টাকা এবং অকটেন ৯৪৮ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের কথা বলা হলেও এতে আগাম ভ্যাটসহ ৩৭ শতাংশ শুল্ক ও ভ্যাট রয়েছে (শুল্ক ১৫ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ও কর ৭ শতাংশ)। আজ যদি কোনো সাধারণ ব্যবসায়ী ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লাভ করত, তবে সেটাকে অতি উচ্চ লাভ হিসেবে দেখা হত। ম্যাজিস্ট্রেটরা ব্যবসায়ীর ব্যবসা সিলগালা করত, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করত।

মুহম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লভ্যাংশকে যদি অনৈতিক হিসেবে দেখা হয়, তবে রাষ্ট্র কীভাবে ৩৭ শতাংশ লাভে ব্যবসা করে? এই ব্যবসা চলতে থাকলে দেশে দুর্ভিক্ষ সুনিশ্চিত, যেখানে কোটি কোটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের মৃত্যু অবধারিত। তাই দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্তকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো অবিলম্বে জ্বালানি তেলের শুল্ক ও ভ্যাট মওকুফ করা।

এ দিন মানববন্ধনে অংশ নেওয়াদের হাতে ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিব কিসে?’, ‘জ্বালানি তেলে ৩৭ শতাংশ খাজনা মওকুফ করো’, ‘গরিব মধ্যবিত্তদের বাঁচতে দাও’- এমন নানা স্লোগান লেখা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।