জ্বালানি ও পণ্যসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি : ঢাবিতে সাদা দলের প্রতিবাদ

জ্বালানি ও পণ্যসামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি : ঢাবিতে সাদা দলের প্রতিবাদ

বিদ্যুৎ খাতে বিপর্যয় এবং জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ সাদা দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ও একাউন্টিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিনের সঞ্চালনায় এবং সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির বিবেক, মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্র। দেশ ও জাতির যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীরা জাতিকে সবসময় দিকনির্দেশনা দিয়েছে এবং জাতিকে সেই ক্রান্তিকাল থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি জাতির জন্য একটি ক্রান্তিলগ্ন। স্বাধীনতার পর এ রকম ক্রান্তিলগ্ন আর এ দেশের মানুষ দেখেনি। আমরা জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান শিক্ষকরা এখানে দাঁড়িয়েছি।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের বিপর্যয় একদিনে ঘটেনি। এটা অনেক দিনের, অনেক বছরের সমন্বিত প্রভাব। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ খাতের অব্যবস্থাপনা, চুরি-ডাকাতি এবং রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের নামে জনগণের টাকা পয়সা যে পাচার করা হয়েছে কিংবা দিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন নামে, তারই সমন্বিত প্রভাব আজকের এই বিদ্যুৎ খাতের বিপর্যয়। আর এই বিপর্যয়ের ফলেই দেশের যে উৎপাদন, তাতে প্রভাব পড়েছে। এটি জনগণের বড় দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।

সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ২০০৯ সালে এই সরকার মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসে। তখন তাদের স্লোগান ছিল দিন বদলের স্লোগান। দিন বদলের স্লোগান দিয়ে, বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা ক্ষমতার মসনদে বসেছিল। তখন বলা হয়েছিল দশ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। ওই সময় সতেরো টাকা চালের কেজি ছিল। সেই টাকা এখন কত গুণ হয়েছে সেটা নামতা পড়লে পাওয়া যাবে। বর্তমানে সেই চালের দাম আশি টাকা।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের যখন দাম বাড়ে শেখ হাসিনা তখন মাঝে মাঝে বলেন পেঁয়াজ না খেলে কী হয়। আবার বলেন, বেগুনি না খেলে কী হয়, কুমড়া দিয়ে কুমড়ানি খেলেই তো হয়। যখনি কোনো কিছুর দাম বেড়ে যায় তখন এ ধরনের কিছু কিছু তত্ত্ব সামনে নিয়ে উনি ফতোয়া দেন, আর সেই ফতোয়াগুলো শুনে জাতি বিভ্রান্ত হয়, আমরা বিভ্রান্ত হই। আজকে এখানে দাঁড়িয়ে আমরা এসবেরই প্রতিবাদ করছি।

প্রধানমন্ত্রীর আন্দোলনের সুযোগ দেয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে সরকার বলেছে, এখন যারা আন্দোলন করতে চায় তাদের আন্দোলন করতে দেয়া হোক। আন্দোলন করলে আমরা আপত্তি করবো না। প্রয়োজনে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করলেও তাদের চায়ের দাওয়াত দেয়া হবে। এই সমস্ত হলো মুখে মধু রেখে অন্তরে বিষতুল্য। চট্টগ্রামের ভাষায় একটা কথা আছে, ‘মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা’ ব্যপারটা সেরকম। মুখে মুখে মধু দিচ্ছে অন্তরে ষোল আনাই বি।

তিনি আরো বলেন, ভোলায় মিছিল হয়েছে, ছাত্রদলের সভাপতি মারা গেছে, তাদেরকে মধু খাওয়াইছে নাকি বিষ খাওয়াইছে সেটা দেখার বিষয়। সুতরাং আন্দোলন করলে কিছু করা হবে না, এ সমস্ত ভণ্ড কথা বাদ দেয়া উচিত।

এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ এমরান কাইয়ুম।