বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা ন্যায্য হবে না: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা ন্যায্য হবে না: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশের কারো বিরুদ্ধে বা কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ন্যায্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসবে বলে আমরা মনে করি না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ বাড়িয়েছি।

রবিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ন্যায্য হবে না। আমরা মনে করি না যে, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসবে। কারণ, আমরা মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছি। যে তথ্য, যে বিষয়গুলো তারা চেয়েছিলেন, সেগুলো যতটুকু সম্ভব দেওয়ার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, গতমাসে নিকট অতীতে একজন মাদক সন্ত্রাসী, যিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে এর আগেও গুলি ছুড়েছেন, সে মারা গেছে দুপুর দুইটার সময়। কোনো রাতের ঘটনা নয়। নারায়ণগঞ্জের চানপাড়ায়, খুব ব্যস্ততম জায়গায়। সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে একজন সন্ত্রাসী গোলাগুলিতে মারা গেছে। অভিযান চালাতে গিয়ে আত্মরক্ষায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নতুন করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির একজন নেতা বলেছেন নতুন করে আরো নিষেধাজ্ঞা আসছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

তিনি আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি যে সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করেছে, সেটা তাদের লবিস্টের কথায়। সমন্বিত পরিকল্পনা এবং প্রচেষ্টার সিদ্ধান্ত হিসেবে তারা ১০ ডিসেম্বর বেছে নিয়েছে। কারণ, গত বছর মার্কিন প্রশাসন থেকে র‌্যাব ও বাহিনীর ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে। বিএনপি যে লবিস্টের পেছনে এত অর্থ ব্যয় করেছে, তাদের লবিস্টরা বলেছে, ১০ ডিসেম্বর আমরা তোমাদের আরো নিষেধাজ্ঞা এনে দেব। লবিস্টরা বলেছে ওই তারিখে রাজনৈতিক সভা করতে, তাহলে সভার ফলাফল ভালো হবে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বলার চেষ্টা করেছিল যে, র‌্যাবের অপারেশনের মধ্য দিয়ে তাদের দলের বা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন করা হচ্ছে। এটা একেবারেই মিথ্যা। এর সাথে কোনো পরিসংখ্যান তারা দিতে পারবে না। র‌্যাবের এই অভিযানগুলোতে কোনো রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হয়নি। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে জীবিকা নির্বাহ বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন, সেই তালিকায় সরকার দলীয় মানুষের সংখ্যা বেশি হবে। আমার প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণ করে সেটাই পাই। বিএনপির দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির কোনো নেতা এই তালিকায় পাবেন না। এই তথ্য আমরা মার্কিন প্রশাসনের কাছে তুলে ধরেছি। এর সুফল আমরা পাচ্ছি।

নতুন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, অব্যাহত যোগাযোগের অংশ হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রদূদের সঙ্গে গত সপ্তাহে আলোচনা করেছি। এটা রুদ্ধদ্বার বৈঠক ছিলো। এতটুকু বলতে পারি যে, আর কোনো নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ আশা করছে না।

র‌্যাব ও সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা হওয়ার পর এটা প্রত্যাহার খুব লম্বা প্রক্রিয়া। সেখানে আইনি প্রক্রিয়াটি বলা যেতে পারে একমাত্র পন্থা। তারা কূটনৈতিকভাবেও এটি প্রত্যাহার করতে পারেন। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া করার জন্য যে তথ্য আমাদের দরকার, যেটা পেলে আমরা একটা মামলা করতে পারব। সেটা আমরা সম্প্রতি পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, প্রক্রিয়াটি এতই শ্লথ যে, কার বিরুদ্ধে, কী অভিযোগের ভিত্তিতে তারা এই কাজটি (নিষেধাজ্ঞা) করলেন, সে তথ্যই আমরা এক বছর পরে পেলাম। আমরা কূটনৈতিকভাবে এটা নিয়ে কাজ করছি।