২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২৯ শতাংশ

২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২৯ শতাংশ

২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২৯ শতাংশ, নিহত ৮ হাজার ১০৪ জন২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে মোট ৭ হাজার ২৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৮ হাজার ১০৪ জন। এর আগের বছর ২০২১ সালে ঘটেছে ৪ হাজার ৯৮৩টি। অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২ হাজার ৪১টি। শতাংশ হিসাবে যা ২৯ শতাংশ। 

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। 

প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নিসচা’র চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। ১১টি জাতীয় দৈনিক, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন মিডিয়া এবং শাখা সংগঠনের তথ্যের  ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৭ হাজার ২৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সড়কপথে ৫ হাজার ৭০টি, নৌ পথে ৭৭টি, রেলপথে ২৫৬টি দুর্ঘটনা ঘটে। 

এসব দুর্ঘটনায় মোট ৮ হাজার ১০৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৯ হাজার ৭৮৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সড়ক পথে মারা গেছেন ৫ হাজার ৭৬০ জন, আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৩৩১ জন। রেলপথে মারা গেছেন ২৭০ জন, আহত হয়েছেন ৫১ জন। নৌ-পথে মারা গেছেন ২০৪ জন, আহত হয়েছেন ১৪৪ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ১৮৬ জন। অপ্রকাশিত তথ্য ও হাসপাতালে ভর্তির পর এবং হাসপাতাল থেকে রিলিজের পর নিহত হয়েছে (আনুমানিক ৩০ শতাংশ) ১ হাজার ৮৭০ জন, আহত হয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ জন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সড়ক, নৌ ও রেলপথে দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ২৪২ জন এবং নারী ৯৯২ জন।  এ ছাড়া যানবাহনের ধরন অনুযায়ী চালক ও চালকের সহকারী নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১৮৮ জন।

এসব দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে নিসচা জানায়, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, দৈনিক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, মোটরসাইকেল চালকদের বেপরোয়া চলাচল এবং মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা; সড়ক, মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে গতিসীমা নির্ধারণ না করা, চালকদের মাদকে আসক্তি, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, বিপজ্জনক ওভারটেকিং ও ওভারলোডিং, বিরতি ছাড়াই দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো বন্ধে আইনের প্রয়োগ না থাকা, সড়ক ও মহাসড়কে বৈধ ও অবৈধ গাড়ি বৃদ্ধি (বিশেষ করে দুই চাকার যানবাহন), মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, একই রাস্তায় বিভিন্ন গতির যানবাহন চলাচল, রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট। এ ছাড়া অশিক্ষিত ও অদক্ষ চালক, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়াও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ।

দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছে নিসচা। এর মধ্যে আছে সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮-এর পুরোপুরি বাস্তবায়নে জরুরি কার্যক্রম গ্রহণ এবং টাস্কফোর্স কর্তৃক দাখিলকৃত ১১১টি সুপারিশনামা দ্রুত বাস্তবায়ন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- নিসচার ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হক কামাল, মহাসচিব লিটন এরশাদ, উপদেষ্টা মো. হামিদ, ড. আইয়ুবুর রহমান খান, ব্র্যাকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম খালিদ মাহমুদ, জিএইচএআই’র কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ড. শরীফুল আলম, সিআইপিআরবি’র ডিরেক্টর ড. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।