দেশে অবৈধ ফার্মেসি লাখের বেশি: ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক

দেশে অবৈধ ফার্মেসি লাখের বেশি: ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক

দেশে নিবন্ধিত ফার্মেসি দেড় লাখের মত। এখনো নিবন্ধনের বাইরে লাখের বেশি ফার্মেসি। বাংলাদেশে যত ফার্মেসি রয়েছে, পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। এক সময় কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ওষুধ আনতে হতো, এখন হাত বাড়ালেই ফার্মেসি। শুক্রবার ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে লাজ ফার্মার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ এসব কথা বলেন।

অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারের পেছনে যত্রতত্র ফার্মেসি অন্যতম কারণ উল্লেখ করে এই মহাপরিচালক বলেন, মাথাব্যাথাসহ যেকোনো কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে। ইচ্ছেমত অ্যান্টিবায়োটিক নিতে পারছে মানুষ। এক্ষেত্রে ফার্মেসিগুলো কোনো নিয়ম মানছে না। এতে করে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এমনকি আইসিইউতে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়, সেটিও কাজে আসছে না। বিশ্বব্যাপী সামনে যা মহামারি রূপ নেবে।

ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ না দিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ইতিমধ্যে আইন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।

সামনে সংসদে পাস হবে আশা করি। একই সঙ্গে অবৈধ ফার্মাসিগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। উন্নত দেশে ফার্মেসি একই রকম হলেও আমাদের এখানে ফার্মেসির পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও চলে। তাই লাজ ফার্মার মতো মডেল ফার্মেসি ও মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন ফার্মেসি ছাড়া সবগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। ইতিমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের এত ফার্মেসি থাকার দরকার নেই।

তিনি আরও বলেন, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে ২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ওষুধ আনতে হয়, আর আমাদের এখানে হাতের কাছেই মেলে। আগে আইনের দুর্বলতার কারণে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। নতুন আইন হলে ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।

এ সময় লাজ ফার্মার প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লুৎফর রহমান বলেন, লাজফার্মা লিমিটেড একটি প্রতিষ্ঠিত এবং সর্বাধিক বিশস্ত খুচরা ওষুধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান, যারা মানসম্মত ঔষধ বিক্রি করে। আমাদের মূললক্ষ্য সেবা, ব্যবসা নয়। আমরাই দেশের প্রথম সার্টিফাইড মডেল ফার্মেসি যারা নির্ধারিত তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ করে।

লাজ ফার্মার চেয়ারম্যান সৈয়দা মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। লাজ ফার্মার কর্মীদেন মনে রাখতে হবে কোনো ধরনের অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা যাবে। প্রতিষ্ঠানেন সুরাম ধরে রাখতে হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে লাজ ফার্মার সেবক পৌঁছে দিতে হবে। কারো বিরুদ্ধে যেন কোনো অনিয়মের অভিযোগ না আসে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, একুশে পদক প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট আবেদ খান; জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রাপ্ত গীতিকার মো. রফিকউজ্জামান; ইব্রাহিম কার্ডিয়াক ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. এম এ রশিদ প্রমুখ।