রিজওয়ানা হাসানকে বাধা ও মারমুখী আচরণে ৫২ বিশিষ্ট নাগরিকের উদ্বেগ

রিজওয়ানা হাসানকে বাধা ও মারমুখী আচরণে ৫২ বিশিষ্ট নাগরিকের উদ্বেগ

চট্টগ্রামে পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও তাঁর সঙ্গীদের বাধা, তাঁদের বহনকারী গাড়ি আটকে দেওয়া ও মারমুখী আচরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৫২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। ওই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে আজ শনিবার বিবৃতি দিয়েছেন তাঁরা।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেছেন, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে চলাফেরা করা ও নিরাপত্তা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। তাই রাষ্ট্রকে সব নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য তিনটি দাবি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ঘটনার অন্তরালে যাঁরা আছেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে কোনো দখলদার, পাহাড়খেকো, নদীখেকো ও ভূমিদস্যু যেন এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস না দেখান, সে জন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারী দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ। বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনার সময় তাঁরা ছুরি, কিরিচ, দা প্রভৃতি দেশীয় ধারালো অস্ত্র বহন করছিলেন। এর আগে কমিশনারের লোকজন প্রতিনিধিদলের গাড়িটি আটকে রেখেছিলেন। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উত্তর পাহাড়তলীতে অবৈধ পাহাড় কাটার অভিযোগে কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর ইতিমধ্যে আকবর শাহ থানায় একটি মামলা করেছে। এর আগে ২০১৫ সালে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। হামলার ওই ঘটনায় আকবর শাহ থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন; সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান; গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী; নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার; অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য; আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সভাপতি আইনজীবী জেড আই খান পান্না; বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত; অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা; গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী; টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান; সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক; মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম; ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন; সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার; বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং; আলোকচিত্রী শহিদুল আলম; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, রোবায়েত ফেরদৌস প্রমুখ।